জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধ নিয়ে তাদের কল্যাণে কাজ করতে জনপ্রশাসন পদক অনুষ্ঠানে প্রশাসনকে তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরকার গঠনের সুযোগ পেয়ে বাবার মতো আমিও ঘোষণা দিয়েছিলাম যে, আমরা জনগণের সেবক। জনগণের সেবা করাটাই আমাদের কাজ। ক্ষমতা ভোগের বস্তু নয়। কতটুকু দেশের জন্য করতে পারলাম, দেশের মানুষকে দিতে পারলাম, সেটাই বিবেচ্য বিষয়।
জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস উদযাপন ও বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক ২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। শনিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ পদক তুলে দেওয়া হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন। ‘জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস’ উপলক্ষে এবারই প্রথমবারের মতো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে এ পদক দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, চেষ্টা করেছি আমাদের প্রশাসনিক ব্যবস্থাটা এমনভাবে গড়ে উঠুক যেটা গণমুখি হবে, জনসেবার হবে, জনগণের জন্য কাজ করবে এবং সিভিল সার্ভিসের দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে আমরা পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রিফর্ম কমিটি গঠন করি। আমরা প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে নতুনভাবে ঢেলে সাজিয়ে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে চায়।
এবছর সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের ২৭ জন কর্মকর্তা, তিনটি মন্ত্রণালয় এবং একটি ইউনিটকে ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক’ প্রদান করা হয়েছে।
এবছর ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক’ পেলেন যারা-
এবার সাধারণ প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা শ্রেণিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, উন্নয়ন প্রশাসন শ্রেণিতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং ভূমি তথ্যব্যাংকের জন্য সংস্কার শ্রেণিতে এ পদক পেয়েছেন ভূমি মন্ত্রণালয়।
এ ছাড়া মানব উন্নয়ন শ্রেণিতে দলগতভাবে এ পদক পেয়েছেন চারজন। তারা হলেন, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, বাগেরহাটের মোল্লাহাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদ হোসেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনিন্দ্য মণ্ডল এবং মোল্লাহাট উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন।
অর্থনৈতিক উন্নয়ন শ্রেণিতে এ পদক পেয়েছেন পাঁচজন। তারা হলেন, নেত্রকোনার সাবেক জেলা প্রশাসক (বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব) কাজী মো. আবদুর রহমান, ওই জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক উপপরিচালক হাবিবুর রহমান, জেলার খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম, সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাহিদ হাসান খান এবং মদনের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান।
দুর্যোগ ও সংকট মোকাবিলা শ্রেণিতে দলগতভাবে এ পুরস্কার পেয়েছেন চারজন। তারা হলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাবেক জেলা প্রশাসক (বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক) মো. মঞ্জুরুল হাফিজ, পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রকিব, সিভিল সার্জন মো. জাহিদ নজরুল চৌধুরী এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. জাকিউল ইসলাম। মূলত করোনা মোকাবিলায় ওই জেলায় ভূমিকা রাখায় তাঁরা এ পদক পাচ্ছেন।
অপরাধ প্রতিরোধ শ্রেণিতে এ পদক পেয়েছেন চারজন। তারা হলেন, মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুন, জেলার সাবেক স্থানীয় সরকার উপপরিচালক আজহারুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ঝোটন চন্দ ও সহকারী কমিশনার আবদুল্লাহ-আবু-জাহের।
জনসেবায় উদ্ভাবন শ্রেণিতে দলগতভাবে এ পদক পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম, ঢাকার জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের সুরক্ষা ইউনিট।
গবেষণা শ্রেণিতে দলগতভাবে এ পদক পেয়েছেন বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান এবং ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পারভেজুর রহমান।
এ ছাড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শ্রেণিতে এ পদক পেয়েছেন পাঁচজন। তারা হলেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নাজমা আশরাফী, সহকারী কমিশনার ফাহিমা বিনতে আখতার ও নাসরিন সুলতানা।
পদকপ্রাপ্তরা একটি করে স্বর্ণপদক, সম্মাননাপত্র এবং ব্যক্তিগত অবদানের জন্য দুই লাখ এবং দলগত অবদানের জন্য পাঁচ লাখ করে টাকা পেয়েছেন।