রাজধানীর পল্টন এলাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
বৃহৎ দুই রাজনৈতিক দলের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ছাড়াও আজ রয়েছে আরও ১২ দলের কর্মসূচি। এসব রাজনৈতিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি নাশকতার শঙ্কায় ঢাকার প্রবেশপথে তল্লাশিও চালিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আওয়ামী লীগ বিএনপি ছাড়াও অন্যান্য দলের কর্মসূচিকে ঘিরে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা বা নাশকতা আশঙ্কা করা হচ্ছে না। তবে সার্বিক প্রস্তুতি পুলিশে রয়েছে বিশৃঙ্খলা এড়াতে গ্রহণ করা হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
বিএনপির সমাবেশ ঘিরে সতর্ক পুলিশ
বুধবার সকাল থেকেই সরেজমিন দেখা যায়, বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে ফকিরাপুল মোড় এবং নাইটিঙ্গেল মোড়ে সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন পুলিশসহ সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কাউকে সন্দেহ হলে তল্লাশি করছে তারা।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের রাজধানীর প্রবেশ মুখ সাভারের আমিনবাজার থেকে যাত্রীবাহী বাসসহ পরিবহনগুলোতে পুলিশের তল্লাশি চলছে। এতে যাত্রীবাহী পরিবহনগুলোকে রাজধানীতে প্রবেশ করতে না দেওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর গাবতলী ও আমিনবাজার এলাকায় পুলিশের যানবাহনে তল্লাশি ও আটকের অভিযোগ অস্বীকার করে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. জসীম উদ্দীন মোল্লা বলেন: এ ধরনের অভিযোগ সত্য নয়। আমাদের সংশ্লিষ্ট থানার ওসি গাবতলীতে আছেন। তিনি জানিয়েছেন এ ধরনের কোন ঘটনা পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটেনি।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আজ ঢাকায় বড় দুটি দলের সমাবেশ রয়েছে। আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে, নাশকতামূলক কার্যক্রম হতে পারে। সে কারণে আমরা নিরাপত্তা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থার আলোকে আমরা সন্দেহজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি। আমরা তল্লাশি করছি। তবে ধীরগতি হল যানবাহন চলাচল সচল রয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই আমাদের এই ব্যবস্থা।
নিরাপত্তায় ড্রোন-এপিসি
পল্টন ও বাইতুল মোকাররম দক্ষিণ গেট এলাকা সরজমিনে দেখা যায়, বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। সাজিয়ে রাখা হয়েছে জলকামান, এপিসি। মোতায়েন দেখা করেছে সাদা পোশাকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য।
সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করা হলে ডিএমপি’র মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান বলেন: পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। পল্টন বিএনপি দলীয় কার্যালয়ের আশপাশে ও বাইতুল মোকাররমের দক্ষিণ গেট এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে কোন ধরনের নাশকতা বা বিশৃঙ্খলা আশঙ্কা করা হচ্ছে না। তবে বিশৃঙ্খলা মোকাবেলায় প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।
রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন: কোনো অনাকাঙ্কিত ঘটনার তথ্য এখন পর্যন্ত নেই। তবে আমাদের পর্যাপ্ত ডেপলয়মেন্ট রয়েছে। সাদা পোশাকে গোয়েন্দারা নজর রাখছেন। সিসিক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা, ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। আমাদের আহ্বান থাকবে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের কর্মসূচি শেষ করবে।
রাজধানীর পল্টনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে দুপুর দুইটায় শুরু হয়েছে বিএনপির সমাবেশ।চলবে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। আর দুপুর তিনটায় বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে ডাকা শান্তি সমাবেশ শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। যা চলবে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে সন্ধ্যায় ডিএমপি কমিশনারের স্পেশাল অ্যাসিস্ট্যান্ট সৈয়দ মামুন মোস্তফা সই করা পৃথক চিঠির মাধ্যমে দুই দলকে ২৩ শর্তে সমাবেশের অনুমতি জানানো হয়।