জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহবুবর রহমান চঞ্চলের গালে থাপ্পড় মেরেছেন বড়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আশরাফ আলী ফকির। উপজেলা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি আশরাফ আলী ফকির নিজেই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে গণমাধ্যমকে বক্তব্য দিয়েছেন।
চঞ্চলকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি উপজেলার হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। পাশাপাশি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানিয়েছে, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আশরাফ আলীর স্ত্রী দেল আফরোজা আরা বানু হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক চঞ্চল। বিদ্যালয়ের দোকান ভাড়ার টাকা নিয়ে তাঁদের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। প্রধান শিক্ষকের স্বামী আশরাফ আলী বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাকিম মণ্ডলকে জানালে তিনি চঞ্চলকে তাঁর কার্যালয়ে আসতে বলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চঞ্চল তাঁর সহকর্মী জিল্লুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে বেলা একটার দিকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের ফটকের সামনে পৌঁছান। সেখানে প্রধান শিক্ষক দেল আফরোজার স্বামী আশরাফ আলী ও চঞ্চলের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে আশরাফ আলী মাহবুবরের গালে দুটি থাপ্পড় মারেন। এ নিয়ে সেখানে তাঁদের দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এতে চঞ্চল আহত হলে তাকে ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
বড়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আশরাফ আলী ফকির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে দম্ভের সাথে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের দোকান ঘরের ভাড়ার টাকা নিয়ে আমার স্ত্রীর সঙ্গে সহকারী শিক্ষক চঞ্চলের দ্বন্দ্ব হয়। এর প্রেক্ষিতে আমার স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে সে তার ফেসবুকে আজেবাজে কথা লেখেন। এ কারণে ওই শিক্ষকের গালে কষে দুটি থাপ্পড় মেরেছি। আমি সেটা ওসিকেও বলেছি। এতে জেল-জরিমানা হলেও সমস্যা নেই। চঞ্চল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হওয়ার কারণে প্রধান শিক্ষককে তোয়াক্কা করেন না। তার বিরুদ্ধে পাঁচ-ছয়টি বিভাগীয় মামলাও রয়েছে।
সহকারী শিক্ষক মাহবুবর রহমান চঞ্চল বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয় মুঠোফোনে কল করে আমাকে দ্রুত তার কার্যালয়ে আসতে বলেন। হাটশহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জিল্লুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে তার কার্যালয়ের ফটকের সামনে পৌঁছাই। সেখানে আমার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককের স্বামী বড়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আশরাফ আলী আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। আমার গলা ও ঘাড়ে প্রচণ্ড আঘাত লেগেছে। এখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছি। আমি ফেসবুকে কাউকে নিয়ে কিছু লিখিনি।’
ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাকিম মণ্ডল বলেন, প্রধান শিক্ষকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক চঞ্চলকে সহকারী ডেকেছিলাম। তার কক্ষে ঢোকার আগেই দুই পক্ষ মারামারি করেছে। এ ঘটনাকে দুঃখজনক বলেও উল্লেখ করেন তিনি।