জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ৫ দিনের ব্যবধানে মেয়েদের আবাসিক দুই হলে চুরির চেষ্টা ও পরবর্তীতে ছাত্রীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং হেনস্তার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর ছাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন।
সোমবার (১২ মার্চ) ভোর ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম খালেদা জিয়া হলে এবং সাড়ে ৪টার দিকে শেখ হাসিনা হলে এই ঘটনা ঘটে।
বেগম খালেদা জিয়া হলের প্রত্যক্ষদর্শী এক ছাত্রী জানান, ‘ভোর ৪টা নাগাদ ১১৭ নম্বর রুমের জানালায় দাঁড়িয়ে একজন লোক অনেকক্ষণ যাবৎ গালিগালাজ করেছে। চোর জানালা দিয়ে মাথা আর হাত ঢুকিয়ে দেয়। চিৎকার করা শর্তেও সেখানেই দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন তিনি। চোর নিজেই বলছে, হল সুপার কী করবে? হল সুপারকে ডাকেন। এতো চিল্লাচিল্লি শুনেও কীভাবে চোর এসব বলে। তাকে একটুও বিচলিত মনে হয়নি।’
ভোর সাড়ে ৪টা নাগাদ শেখ হাসিনা হলেও একই ঘটনা ঘটে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রীরা। ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সুমাইয়া অর্পি বলেন, ‘তখন রাত আনুমানিক সাড়ে ৪টা, ১১৮ নং রুমের সকলেই ঘুমাচ্ছিল। জানালায় কারো নক করার আওয়াজে আমাদের ঘুম ভাঙে। একজন লোক এক নাগাড়ে অনেক বিশ্রী ভাষায় গালি দিয়েই যাচ্ছে। আমরা সবাই চিৎকার করে হল সুপার ও খালাদের ডাকি। পরে লোকটিকে ধরা যায়নি।’

এ বিষয়ে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের ছাত্রী কামরুন নাহার বলেন, ‘ভোর ৪টায় রুমমেট আপুর চোর চোর চিৎকার শুনে জেগে উঠি। তখন আমার পাশের আপুকে ডাকি। ভয় পেয়ে অনেকক্ষণ বসে ছিলাম। চোর হাত এবং মাথা জানালা দিয়ে ঢুকানোর চেষ্টা করেছে। রুমের জানালার কাছে দাঁড়িয়ে চোর অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে অনেকক্ষণ। তবে কিছু নিতে পারেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই ভোরবেলা আমাদের গালিগালাজ করে গেল, হেনস্তা করল, হলের গার্ডরা কি তখন ঘুমিয়ে ছিল? নাকি তারাই এর সঙ্গে জড়িত? এই হলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা কোথায়? এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তির ফলে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
এ বিষয়ে বেগম খালেদা জিয়া হলের প্রাধ্যক্ষ তাহমিনা আক্তার বলেন, ‘আমি ঘটনাটি শোনা মাত্রই আমার হলের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছি৷ ঘটনাটি শোনা মাত্রই তাৎক্ষণিক হলের গার্ডরা সেখানে যায়৷ গিয়ে কাউকে সেখানে তারা দেখতে পায়নি। তবে এমন ঘটনা যেহেতু ঘটেছে আমরা হলের নিরাপত্তা আরোও জোরদার করবো।
ঘটনাটি অতি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ হোসনে আরা।
এর আগে গত ৭ মার্চ ভোররাতে শেখ হাসিনা হল হলে ঢুকে ১১শ টাকা চুরি ও ছাত্রীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে অজ্ঞাতনামা এক যুবকের বিরুদ্ধে।