সব হিসেব-নিকেশ, আলোচনা-সম্ভাবনা উড়িয়ে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ঘরে তুলেছেন দাসুন শানাকা-ভানুকা রাজাপাকসেরা। শিরোপার মঞ্চে পাকিস্তানকে ২৩ রানে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা।

ছয় দলের এশিয়া কাপে একে একে ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তানের মতো ফেভারিট দলকে হারিয়ে ফাইনালে আসা শ্রীলঙ্কা তুলে নিয়েছে এশিয়া কাপে নিজেদের ষষ্ঠ শিরোপা। টি-টুয়েন্টি ফরম্যাটে এটি তাদের প্রথম এশিয়া কাপ জয়।
শুরুতে ব্যাট করে নির্ধারিত ওভারে ৬ উইকেটে ১৭০ রান তুলেছিল শ্রীলঙ্কা। জবাবে সব উইকেট হারিয়ে ১৪৭ পর্যন্ত যেতে পারে পাকিস্তান।
টুর্নামেন্টের ইতিহাসে পাকিস্তানের বিপক্ষে এটি ছিল শ্রীলঙ্কার চতুর্থ ফাইনাল। রাজাপাকসের ব্যাটিংয়ের পর প্রমোদ মধুসন ও হাসারাঙ্গার বোলিংয়ে জয় তুলে সাফল্যের সংখ্যা বাড়িয়ে নিয়েছে লঙ্কানরা। ১৯৮৬, ২০১৪ সালে ওয়ানডে ফরম্যাটের আসরের পর ২০ ওভারের ক্রিকেটের ফাইনালে পাকিস্তানকে আরেকবার হারিয়ে দিল দ্বীপ দেশটি।
দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার দেয়া ১৭১ রানের লক্ষ্যে খুব একটা ভালো শুরু করতে পারেনি পাকিস্তান। পুরো আসরে ব্যাট হাতে ধুঁকতে থাকা বাবর আজম ছিলেন খোলসে আবৃত, ৬ বলে ৫ রান করে ফেরেন পাকিস্তান অধিনায়ক।
চাপ কাটাতে আসা ফখর জামান তিনে নেমে বরং চাপ আরও বাড়িয়ে দেন। প্রমোদের বলে রান না করেই ফেরেন বাঁহাতি ব্যাটার।
২২ রানে ২ উইকেট হারানো দলকে দারুণ এক জুটিতে টানেন ইফতেখার ও রিজওয়ান। একসময় মনে হচ্ছিল এ জুটিই পাকিস্তানকে এশিয়া কাপের তৃতীয় শিরোপা এনে দেবে! সেখানেও খেই হারায় পাকিস্তান।
ইফতেখার ৩১ বলে ৩২ রান করে ফিরলে পাকিস্তানের মিডল অর্ডার ধ্বসে পড়ে তাসের ঘরের মতো। মোহাম্মদ নেওয়াজ, খুশদিল শাহ, আসিফ আলীরা শিরোপার মঞ্চে মুখ থুবড়ে পড়েন। দলীয় ১১০ রানে ফিফটি করা রিজওয়ান ফিরলে পাকিস্তানের হার অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায়।
৪ ওভারে ৩৪ রান খরচায় ৪ ব্যাটারকে ফিরিয়ে একাই ধসিয়ে দেন প্রমোদ মাধুসান। টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটের তারকা হাসারাঙ্গা ফেরান ৩ ব্যাটারকে। শেষদিকে হারিস রউফের ৯ বলে ১৩ রান ব্যবধান কমালেও হার ঠেকাতে পারেনি। দেড়শর আগেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তান।
এর আগে, টস হেরে বাবর আজমের দলকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দেয় লঙ্কানরা। শুরুটা একদমই ভালো হয়নি দাসুন শানাকার দলের। ২ রানে প্রথম উইকেট হারায় তারা। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি অন্য ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কাও। ১১ বলে ৮ রান করে আউট হন হারিস রউফের বলে ক্যাচ দিয়ে।
নিজের দ্বিতীয় ওভারে ধানুস্কা গুনাথিলাকাকে বোল্ড করেন রউফ। চাপ সামলাতে পারেননি ধনঞ্জয়া ডি সিলভাও। ভালো শুরু পেয়েও ২৮ রানে ফিরেছেন ইফতেখারের বলে। বিপদের সময় কাজে আসেননি অধিনায়ক শানাকাও।
ষষ্ঠ উইকেটে ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভাব হন হাসারাঙ্গা। পুরো টুর্নামেন্টে ব্যাট হাতে ব্যর্থ অলরাউন্ডার ফাইনালের মঞ্চে জ্বলে ওঠেন দারুণভাবে। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ২১ বলে করে যান ৩৬ রান। রউফের বলে উইকেটকিপারের হাতে ধরা পড়েন।
পরে অবশ্য রানের চাকা সচল রেখেছেস রাজাপাকসে। সপ্তম উইকেটে ফিফটি পেরোনো জুটি গড়েছেন। তাতে বড় সংগ্রহ দাঁড় করিয়ে ফেলে শ্রীলঙ্কা। ৬ চার ও ৩ ছয়ে ৭১ রানে অপরাজিত থাকেন রাজাপাকসে।
পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট হারিস রউফের। একটি করে উইকেট গেছে নাসিম শাহ, শাদাব খান ও ইফতেখার আহমেদের ঝুলিতে।