ডায়েট কোক, চুইংগামসহ অন্যান্য মিষ্টি স্বাদযুক্ত পণ্য তৈরিতে চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত ‘অ্যাসপার্টাম’ নামক কৃত্রিম মিষ্টিকে ক্যান্সার সৃষ্টির সম্ভাব্য কারণ হিসেবে ঘোষণা দিতে যাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
গতকাল ৩০ জুন শুক্রবার বার্তাসংস্থা রয়টার্স তাদের একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চলতি জুলাই মাসে চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত অ্যাসপার্টামকে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করতে যাচ্ছে ডব্লিউএইচও। জুন মাসের শুরুতেই ডব্লিউএইচও এর ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার (আইএআরসি) এর একটি বিশেষজ্ঞ দল বিভিন্ন নিরীক্ষা শেষে একটি বৈঠকে বসে। সেখানেই অ্যাসপার্টামকে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ডায়েট কোকে কৃত্রিমভাবে মিষ্টি স্বাদ নিয়ে আসার জন্য ব্যবহার করা হয় অ্যাসপার্টাম। যা মূলত ক্যালরি ফ্রি কিন্তু এই উপাদানটি ১ লিটার কোকে প্রায় ২২ চামচ চিনির সমান কাজ করে। আর এই অ্যাসপার্টামকেই কার্সিনোজেন হিসেবে বিবেচিত করছে ডব্লিউএইচও এবং আইএআরসি। কার্সিনোজেন এমন একটি উপাদান যা মানবদেহে প্রবেশ করলে তা থেকে ক্যান্সার ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে। তবে তা থেকে ক্যান্সার ছড়ানোর সম্ভাবনা কতটা রয়েছে, তা নির্ভর করে পরিস্থিতি, কী পরিমাণে তা মানবদেহে প্রবেশ করছে তার ওপর।
অ্যাসপার্টামকে চিনির বিকল্প হিসেবে ৭০ এর দশকে ছাড়পত্র দেয় বিজ্ঞানীরা। আর তাই স্বাস্থ্যসচেতন অনেকেই বহু বছর ধরে ডায়েট কোক পান করে আসছেন। তবে একবছর আগে থেকে এই অ্যাসপার্টামসহ আরও ১৭টি কেমিক্যাল নিয়ে শুরু হয় গবেষণা। ফ্রান্স এবং বেলজিয়ামের প্রায় ১ লাখ মানুষের ওপর চলানো হয় গবেষণা। এতেই উঠে আসে ভয়ঙ্কর এই তথ্য।
আইএআরসি এর আগেও বিভিন্ন খাদ্য পণ্যের কয়েকটি উপাদানকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করেছে। সংস্থাটির এমন ঘোষণার পর পণ্যগুলোর বাজারেও এর বড় প্রভাব পড়েছিল। এছাড়াও অনেক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। এমনকি কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যে ব্যবহৃত উপাদান বদলাতে বাধ্য হয়েছিল।
তবে কোমল পানীয় তৈরিকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সবসময় দাবি করে আসছে, তাদের পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান নেই। এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ক্যান্সার ইউনিট বিষয়টি নিয়ে গবেষণার পর তারা ভিন্ন তথ্য পেয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।