সস্ত্রীক ইরানের কিংবদন্তী চলচ্চিত্র নির্মাতা দারিউস মেহেরজুইয়ের খুনের ঘটনায় ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ইরানের পুলিশ। দেশটির পুলিশ সদর দপ্তরের বরাতে সংবাদ সংস্থা আইএসএনএ (ISNA) এমন খবর প্রকাশ করেছে।
ইরান পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে অপরাধীর জোরপূর্বক ঢোকার কোনও চিহ্ন মেলেনি, এমনকি বাড়ির দরজারও কোনও ক্ষতি হয়নি। তবে ঘটনাস্থলে অপরাধীর কিছু চিহ্ন পাওয়া গেছে। ইরান পুলিশে সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে সংবাদ সংস্থা আইএসএনএ (ISNA)-কে জানানো হয়েছে, ঘটনায় ৪ জনকে চিহ্নিত করা গেছে। দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যদিও আততায়ীদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
এরআগে ইরানের আলবোর্জ প্রদেশের প্রধান বিচারপতি হোসেন ফাজেলি-হরিকান্দি জানান, মেহেরজুই ও তার স্ত্রী ওয়াহিদেহ মোহাম্মদীফার ঘাড়ে একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন মিলেছে। তিনি জানিয়েছিলেন, মেহেরজুই তার মেয়ে মোনাকে শনিবার (১৪ অক্টোবর) স্থানীয় সময় রাত ৯টায় একটি টেক্সট মেসেজ পাঠিয়েছিলেন। তাকে কারাজের পশ্চিমে তাদের বাড়িতে রাতের খাবারের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সেই মেসেজের দেড়ঘণ্টা পর তিনি সেখানে পৌঁছালে তার বাবা-মাকে ক্ষতবিক্ষত দেখতে পান।
পুলিশের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তখন জানানো হয়, হত্যার উদ্দেশ্য অনুমান করা যায়নি। তবে নির্মাতার স্ত্রী সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহ ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় হত্যার হুমকি পাওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করেছিলেন।
মেহেরজুই ১৯৭০-এর দশকের গোড়ার দিকে ইরানের চলচ্চিত্রে নতুন করে প্রাণ যোগান। তার চলচ্চিত্র ছিল বাস্তববাদ নির্ভর। তিনি ১৯৯৮ সালে শিকাগো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে একটি সিলভার হুগো এবং ১৯৯৩ সালের সান সেবাস্তিয়ান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে একটি গোল্ডেন সিশেল সহ অনেক পুরষ্কার পেয়েছিলেন।
১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে মেহেরজুই নির্মাণ করেন ‘দ্য কাউ’। এই চলচ্চিত্রটি পরবর্তীকালে অনেক স্বাধীন নির্মাতাকে চলচ্চিত্র নির্মাণের স্বপ্ন দেখায়। যার পথ ধরে বিশ্ব সিনেমায় আব্বাস কিয়ারোস্তামি, হাজির দারউসের আবির্ভাব ঘটে।
ইরানি চলচ্চিত্র নির্মাতারা তাদের রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন আর শোষণের প্রেক্ষাপটটা বিভিন্নভাবে পরবর্তী সময়ের চলচ্চিত্রে আনার চেষ্টা চালাতে থাকেন। এছাড়াও নির্মাতার ‘লেইলা’, ‘হামোউন’, ‘দ্য ‘টেন্যান্টস’ ও ‘দ্য পিয়ার ট্রি’ উল্লেখযোগ্য। –রেডিও ফারদা