আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শচীন টেন্ডুলকারের ১০০ সেঞ্চুরির রেকর্ড কে ভাঙতে পারেন- এ প্রশ্নের উত্তরে এক বাক্যে সবাই বিরাট কোহলির নামটাই উচ্চারণ করতেন। সেঞ্চুরি করাটাকে তিনি একসময় নিয়মে পরিণত করেছিলেন।
সুসময়ের পর মানুষের জীবনে আসে দুঃসময়। কোহলিও খারাপ সময়ের চক্রে পড়ে হাজার দিনেরও বেশি সময় পাননি সেঞ্চুরির দেখা। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন, হারিয়েছেন তিন ফরম্যাটের অধিনায়কত্ব। ফর্ম হারিয়ে ফেলা কোহলি দলে জায়গাটাই খুইয়ে ফেলেন কি না- সেই গুঞ্জনটাও জোরালো হয়েছিল।
সকল গুঞ্জনের সমাপ্তি টেনে রানে ফিরেছেন কোহলি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টিতে প্রথম সেঞ্চুরিটা যেন তার ব্যাটে ফেরাল প্রাণ। ৬১ বলে ১২২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে থামালেন হরেক আলোচনা-সমালোচনা।
তাৎপর্যপূর্ণ শতকটি স্ত্রী আনুশকা শর্মা ও মেয়ে ভামিকাকে উৎসর্গ করেন ৩৩ বর্ষী ক্রিকেটার। ম্যাচ সেরার পুরস্কার নেয়ার সময় বলে গেলেন হৃদয় ছোঁয়া অনেক কথা।
‘আজকের দিনটি যেভাবে গেল, তার জন্য প্রথমেই আমি কৃতজ্ঞ। আমি একজন বিশেষ ব্যক্তির কথা উল্লেখ করেছি। আনুশকা, সে আমার এই কঠিন সময়ে আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল। আমাকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়েছিল। আমি কারো কাছে কিছু প্রমাণ করতে মরিয়া ছিলাম না।’
‘আমি বেশ ভালো ব্যাটিং করছিলাম এবং অবদান রাখছি। কিন্তু সেটা যথেষ্ট বলে মনে হচ্ছে না। তবে আমি যেমনটা বলেছি, ঈশ্বর আমাকে অতীতে অনেক ভালো সময় উপহার দিয়ে আশীর্বাদ করেছেন। সেই কারণেই আমি এখনকার অবস্থানে আছি। আমার স্বীকার করতে কোনো লজ্জা নেই যে, ঈশ্বর আমাদের সকলকে ভাগ্যের সবকিছু দিয়ে আশীর্বাদ করছেন। আমাদের কেবল কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। তাই সজীব হয়ে ফিরে এলাম।’
‘টিম ম্যানেজমেন্টও এই সময়ে আমার সঙ্গে দারুণভাবে যোগাযোগ রেখেছে। তারা আমার দৃষ্টিভঙ্গি ঠিক রেখেছে। আমি যখন ফিরে আসি, তখন আমার কাছে খুব বেশি বার্তা আসেনি। তারা শুধু বলেছিল, আপনি ব্যাট করুন এবং নিজের খেলাটা উপভোগ করুন। সুতরাং এটি উপভোগের জায়গায় ফিরে আসার ব্যাপার ছিল।’
‘লোকেরা আমাকে বলতো যে, আমি এটা ভুল করছি, সেটা ভুল করছি। আমি আমার সেরা সময় থেকে সমস্ত ভিডিও বেছে নিয়ে দেখেছি। দিনের শেষে আপনি একজন ব্যক্তি হিসেবে জানেন যে কোথায় দাঁড়িয়ে আছেন। আপনার যাত্রার জন্য আপনাকে কী করতে হবে তাও জানেন। লোকেরা তাদের মতামত দিতে থাকবে। কিন্তু আপনি যা অনুভব করছেন, সেটা তারা অনুভব করতে পারে না। আমি এই গত কয়েক মাসকে খুব ভিন্নভাবে অনুভব করেছি, যা আমার জীবনের একটি বিশেষ সময়। আমি সেই সময়ের জন্য খুব কৃতজ্ঞ। ক্রিকেটে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হয়েছিল।’