কিংবদন্তী নির্মাতা, লেখক ও গীতিকার আমজাদ হোসেন নেই তিন বছর! ২০১৮ সালের এই দিনে ব্যাংককে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
এদিকে বাবার অনুপস্থিতির বিষয়টি মৃত্যু দিনে ব্যাখ্যা করেন আমজাদ হোসেনের ছোট ছেলে সোহেল আরমান।
প্রয়াত বাবার উদ্দেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি লিখেন, ‘বাবা, দেখতে দেখতে তিনটি বছর পার হয়ে গেলো, তুমি ছাড়া আছি এই পৃথিবীতে। কেমন আছো তুমি ওপারে? জানো, তোমার ফেলে যাওয়া জিনিসগুলো এখনো তোমার ঘরে সাজিয়ে রেখেছে মা। কাউকেই স্পর্শ করতে দেয় না, এমনকি আমাকেও না। তোমার ঐ ফেলে যাওয়া ছোট ছোট জিনিস গুলো প্রতিদিনই খেয়াল রাখছে মা। ওটাই এখন মায়ের স্বান্তনা, বেঁচে থাকা। কেমন যেন মায়ের এক অযৌক্তিক বিশ্বাস হঠাৎ তোমার ডাক শোনা যাবে …!’
স্মৃতিচারণ করে সোহেল আরমান আরো লিখেন, ‘২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর ভোরবেলা তুমি অসুস্থ হয়ে এই যে হাসপাতালে গেলে আর তো বাড়ি ফিরে এলেনা। তারপর ২৬ দিন মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে হেরে গেলে, আজ সেই ১৪ ডিসেম্বর। এই দিনটার প্রতি অনেক অভিমান আমার। এই দিনটাই বাবাকে জন্ম দিয়েছে এই পৃথিবীতে (১৪ আগস্ট ১৯৪২), আবার এই দিনটাই বাবাকে নিয়ে গেছে ওপারে (১৪ ডিসেম্বর ২০১৮)। এভাবেই তোমার কত শত স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছি আমরা। বাবা তুমি এতটাই বড় তোমার অস্তিত্বে, এতটাই বড় আকাশের মত তোমার অনুভব আজো আমাকে বোধ দেয় যে তুমি আছো সর্বক্ষণ আমারই চারপাশে। তোমাকে ভালবাসি বাবা প্রত্যেকটি সন্তানের মতই। তবে বাবা যে আসলেই সন্তানের জন্য কতবড় একটা বটবৃক্ষ, কত উত্তপ্ত দিনে কী নিবিড় পরম শান্তির ছায়া দেয়, প্রচণ্ড ঝড়ে কী করে যে আগলে রাখে তার উদাহরণ তুমিই এবং তোমার মতই আদর্শ সব বাবারা।’
আমজাদ হোসেনের পরিচালনায় জনপ্রিয়তা পাওয়া ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘বাল্যবন্ধু’, ‘পিতাপুত্র’, ‘এই নিয়ে পৃথিবী’, ‘বাংলার মুখ’, ‘নয়নমনি’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘সখিনার যুদ্ধ’, ‘ভাত দে’, ‘হীরামতি’, ‘প্রাণের মানুষ’, ‘সুন্দরী বধূ’, ‘কাল সকালে’, ‘গোলাপী এখন ঢাকায়’ ‘গোলাপী এখন বিলেতে’ ইত্যাদি।
১৯৭৮ সালে ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ এবং ১৯৮৪ সালে ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া নানামাত্রিক কাজের জন্য ১৪ বার জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। একইসাথে বাংলা একাডেমী পুরস্কার সহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।