টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা তেমন কিছু না ভেবে একটি হাত বাড়িয়ে দিয়ে থাকি। আর ডাক্তারও সেই হাতটিতে টিকা দিয়ে থাকেন। কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণা শেষে গবেষকরা বলেছেন, ‘আপনার ডান বা বাম বাহুতে টিকা নেওয়ার সিদ্ধান্তটি তাৎপর্যপূর্ণ।’ টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে হাতের পছন্দ বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলেও মনে করেছেন তারা।
শনিবার ১৯ আগস্ট পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যম জিও নিউজে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। এতে বলা হয়, জার্মানিতে পরিচালিত এক সমীক্ষার মাধ্যমে গবেষণাটি করা হয়।
এতে দেখা যায়, কোভিড-১৯ এর একাধিক ভ্যাকসিনের ডোজ যারা এক হাতে গ্রহণ করেছেন তারা দু’হাতে টিকা নেওয়ার চেয়ে অধিক শক্তিশালী প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রদর্শন করেন।
দ্য ল্যানসেট ডিসকভারি সায়েন্সের সাথে সম্পৃক্ত ই-বায়োমেডিসিন জার্নালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, কোভিড-১৯ সংক্রমিত হননি এমন ৩০০ জনের মাঝে ভ্যাকসিনের এই পরীক্ষাটা করা হয়। ২০২১ সালের মার্চ এবং সেপ্টেম্বরের টিকা নেওয়া
এরা সবাই ফাইজার-বায়োটেক ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ গ্রহণ করেন।
অংশগ্রহণকারীদের দু’টি দলে বিভক্ত করা হয়। একটি দলকে শুধুমাত্র এক হাতে ওই দুটি ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। অন্যদের দু’হাতে দু’টি ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।
ভ্যাকসিন দেওয়ার দুই সপ্তাহ পর এক বিশ্লেষণে দেখা যায়, যারা একই বাহুতে দুইটি ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাদের শরীরে ‘কিলার টি সেলস’ বা হত্যাকারী কোষ নামে পরিচিত এক ধরণের ইমিউন কোষ শনাক্ত হয়েছে ৬৭ শতাংশ। যারা দুই বাহুতে ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাদের শনাক্ত হয়েছে মাত্র ৪৩ শতাংশ।
পেডিয়াট্রিক সংক্রামক রোগের বিশেষজ্ঞ এবং বোস্টন চিলড্রেনস হাসপাতালের ভ্যাকসিন প্রোগ্রামের পরিচালক ডা. ওফার লেভি বলেন, যদিও গবেষণাটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে এটি অন্যান্য চিকিৎসার মতো প্রচলিত কারণগুলোর বাইরে ভিন্ন প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনাকে তুলে ধরবে।
ডা.ওফার লেভি বলেন, এই গবেষণাটি ভ্যাকসিনের প্রতিক্রিয়াগুলোর ভিন্নতা বোঝার জন্য নতুন উপায় উন্মুক্ত করেছে। আগামীতে এটি নিয়ে আরও বেশি গবেষণা প্রয়োজন বলে জানান লেভি।
তিনি বলেন, গবেষণার ফলাফল কোভিড-১৯ এর পাশাপাশি অন্যান্য ভ্যাকসিনগুলো শরীরে কি প্রভাব ফেলতে পারে তার দ্বার উন্মোচন হবে। ভ্যাকসিন আবিষ্কার, এর বিকাশ এবং সরবরাহ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা প্রয়োজন মনে করেন তিনি।
বিজ্ঞাপন