চলতি অর্থবছরের গত ১১ মাসে (জুলাই-মে) প্রবাসী বাংলাদেশীরা এক হাজার ৯৪৪ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এক দশমিক এক শতাংশ বেশি।
রোববার ২৫ জুন বাসস জানায়, সংসদে সরকারি দলের সদস্য মামুনুর রশীদ কিরণের টেবিলে উপস্থাপিত তারকা চিহ্নিত এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গার অপর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, সঞ্চয়পত্রের লভ্যাংশের ওপর ও প্রাইজবন্ডের পুরস্কারের ওপর আগে থেকেই উৎসে আয়কর ধার্য রয়েছে। তবে এর ফলে সঞ্চয়পত্র বিক্রি ও প্রাইজবন্ড বিক্রি কমেনি। উৎসে আয়কর প্রত্যাহারের কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই।
সরকারি দলের অপর সদস্য হাবিবুর রহমানের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিগত অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে আমদানি ও রপ্তানি পর্যায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ছিল ৯৩ দশমিক ১৫ শতাংশ। স্থানীয় পর্যায়ে মূসকের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ছিল ৮৪ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং আয়কর ও ভ্রমণ কর পর্যায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ছিল ৯৭ দশমিক ১৭ শতাংশ। বৈশ্বিক মহামারির কারণে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম সীমিত হওয়ায় তিন হাজার ৮৯৬ কোটি টাকা হ্রাস পেয়েছে। আমদানি ও স্থানীয় পর্যায়ে কিছু পণ্যে কর অব্যাহতি দেয়ায় ৩৪৪ কোটি টাকা কম রাজস্ব আহরিত হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ খাতে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫০৬ কোটি টাকা কম রাজস্ব আহরিত হয়েছে, জ্বালানি সংকটের কারণে সিরামিকসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাতের উৎপাদন ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কমে যাওয়ায় রাজস্বের পরিমাণ কমেছে।
মুস্তফা কামাল জানান, করোনা পরবর্তী সময়ে আমদানি পর্যায়ে কাঁচামালের মূল্য ও ফ্রেইট চার্জ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এতে কাস্টম ডিউটি বাড়লেও স্থানীয় পর্যায়ের রেয়াতের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় রাজস্ব কমেছে। ব্যাংকিং সেবাখাতে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এক হাজার ৪৮২ কোটি কম রাজস্ব আদায় হয়েছে।
এছাড়াও কয়েকটি খাত যেমন পেট্রোলিয়াম, অয়েল অ্যান্ড লুব্রিক্যান্ট খাতে ২৮৮ কোটি, সিগারেট খাতে সাত হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা, মোবাইলফোন খাতে দু’হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা কম রাজস্ব আয় রয়েছে। কোভিড-১৯ পরবর্তী অর্থনৈতিক মন্দা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বিশ্বব্যাপী সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও ব্যয় সংকোচন নীতি ইত্যাদি কারণে আমদানির পরিমাণ কমে যাওয়ায় করের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি বলে অর্থমন্ত্রী জানান।
বিজ্ঞাপন