বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে টি-টুয়েন্টিতে বাংলাদেশের ‘পঞ্চাশ’

চট্টগ্রাম থেকে: নতুনদের নিয়ে অভিযানের শুরুতেই এলো বড় সাফল্য। টি-টুয়েন্টিতে প্রথমবার ইংল্যান্ডকে হারালো বাংলাদেশ। সেইসঙ্গে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে টিম টাইগার্স পেল ৫০তম জয়ের দেখা। ১৭ বছরের পথচলায় এ মাইলফলকে পৌঁছাতে লেগেছে ১৪৬ ম্যাচ।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দ্বিপাক্ষিক টি-টুয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচ বাংলাদেশ জিতেছে ৬ উইকেটে। বন্দরনগরীর জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে নাজমুল হোসেন শান্তর ফিফটিতে ১৫৭ রানের লক্ষ্যে স্বাগতিকরা পৌঁছায় ২ ওভার আগেই। রানতাড়ার পথে উইকেট হারায় ৪টি।

দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ১০.৩ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে একশ রান তুলে নেয় বাংলাদেশ। পরে দ্রুত দুটি উইকেট হারালেও সাকিব আল হাসান ও আফিফ হোসেন মিলে চাপে পড়তে দেননি দলকে। সাকিব ৩৪ ও আফিফ ১৫ রানে অপরাজিত থেকে ১৮ ওভারে তুলে নেন জয়।

লিটন দাসের সঙ্গে ওপেনিং জুটি বাধেন ৮ পর পর জাতীয় দলে ফেরা রনি তালুকদার। ৩.৩ ওভারে তারা তোলেন ৩৩ রান। ১৪ বলে চারটি চারের সাহায্যে ২১ রান করে আদিল রশিদের গুগলিতে বোল্ড হন রনি। দলীয় পঞ্চাশের আগে জফরা আর্চারের বলে ক্রিস ওকসের হাতে ক্যাচ দেন লিটন। ১০ বলে দুটি চারে করে যান ১২ রান।

পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পরও দ্রুত রান তোলায় মনোযোগী হন শান্ত ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়। বাংলাদেশের সংগ্রহ একশ পেরিয়ে যাওয়ার পর আউট হন তরুণ ব্যাটার। হৃদয় ১৭ বলে ২৪ রান করেন দুটি চার ও একটি ছক্কায়।

৩৯ বলে ৬৫ রানের জুটি ভাঙার পরপরই মার্ক উডের নিচু হয়ে আসা বলে বোল্ড হন শান্ত। ৩০ বলে খেলেন ৫১ রানের ইনিংস। মারেন আটটি বাউন্ডারি।

ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম ছিল ফাঁকা। টি-টুয়েন্টি ম্যাচ মাঠে গড়াতেই দেখা যায় বিপরীত চিত্র। দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামতে ভরে ওঠে গ্যালারি। মাঠে আসা দর্শকদের হতাশ করেনি বাংলাদেশ। এনে দিয়েছে উৎসবের উপলক্ষ। এবার দেখার মিরপুরে শেষ দুই টি-টুয়েন্টিতে কী অপেক্ষায়।

সফরকারীদের ১৫৬ রানে আটকানোর পরই জাগতে থাকে জয়ের আশা। এরআগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ খেলেছিল মাত্র একটি টি-টুয়েন্টি। ম্যাচটি ২০২১ টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের। এরআগে কখনোই ছোট ফরম্যাটে খেলেনি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ। উপেক্ষার জবাব বলে-ব্যাটে ভালোভাবেই দিয়েছে বাংলাদেশ।

টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে টি-টুয়েন্টির বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা দুর্দান্ত শুরু করলেও খুব বেশিদূর যেতে দেয়নি বাংলাদেশ। মাঝারি পুঁজিতে আটকে রাখে।

পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে মিডঅনে সহজ ক্যাচ তোলেন জস বাটলার। বোলার নাসুম উদযাপনের অপেক্ষায়। অবাক করে বল হাতে জমাতে ব্যর্থ হন সাকিব। ১৯ রানে জীবন পেয়ে ইংল্যান্ড ওপেনার খেলেন ৬৭ রানের ইনিংস। সফরকারী অধিনায়ক বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দিলেও স্লগ ওভারে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ।

ইংলিশ ওপেনাররা বেশ ভুগিয়েছে বাংলাদেশকে। ৮০ রানের জুটি গড়ার পথে অবশ্য সুযোগ দিয়েছিলেন দুজনই। ২০ রানে নাসুমকে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছিলেন ফিল সল্ট। লুফে নিতে পারেননি বাঁহাতি স্পিনার। পরে সাকিব ক্যাচ ছাড়েন বাটলারের।

৩৫ বলে ৩৮ রান করে নাসুমের বলে উইকেটরক্ষক লিটনের গ্লাভসে ফেরেন সল্ট। ওপেনিং জুটি ভাঙার পর ডেভিড মালান টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ৪ রান করে সাকিবের বলে আউট হন। লড়াই চালিয়ে যান বাটলার। ৪২ বলে চারটি করে চার-ছক্কায় ৬৭ রান করে হাসান মাহমুদের বলে আউট হন অধিনায়ক।

আগের ওভারের শেষ বলে দ্রুত রান তুলতে থাকা বেন ডাকেটকে বোল্ড করেন মোস্তাফিজুর রহমান। পরপর দুই বলে উইকেট হারানোর পর ইংল্যান্ডকে চেপে ধরে বাংলাদেশ। ১৩ বলে তিনটি চারে ২০ রান করেন ডাকেট।

হাসান মাহমুদের দ্বিতীয় শিকার হন স্যাম কারেন (৬)। তাসকিন আহমেদ ক্রিস ওকসকে বোল্ড করলে দেড়শর আগেই ৬ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। পরে আর হাত খুলে মারতে পারেননি সফরকারীদের কেউ।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রামটি-টুয়েন্টিবাংলাদেশ-ইংল্যান্ড সিরিজলিড স্পোর্টস