
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে জমি খালি করার বিষয়ে শেষ সময়সীমা জানিয়ে দিয়েছে বিশ্বভারতী। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জমি খালি করতে বলা হয়েছে তাকে। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে জমি খালি করা না হলে বলপ্রয়োগ করে উচ্ছেদ করার ব্যাপারেও সতর্ক করা হয়েছে অমর্ত্য সেনকে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দ বাজার জানিয়েছে, গতকাল বুধবার বেলা ১২টা নাগাদ বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ভবনে জমি বিতর্কের শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে অমর্ত্য সেন বা তার আইনজীবী গোঁরাচাদ চক্রবর্তী কেউই উপস্থিত ছিলেন না। তাই তার বিরুদ্ধে কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
এর আগে বিশ্বভারতীর জয়েন্ট রেজিস্ট্রার এবং এস্টেট অফিসারকে চিঠি দিয়ে অমর্ত্য সেন লিখেছিলেন, পারিবারিক ভিটে জমি উত্তরাধিকার সূত্রে তারই প্রাপ্য। এ নিয়ে কোনও বিতর্কের অবকাশ নেই। তিনি ওই চিঠিতে আরও লিখেছিলেন, “শান্তিনিকেতনের ‘প্রতীচী’ বাড়ি যা ১৯৪৩ সাল থেকে আমার পরিবারের দখলে এবং আমি নিয়মিত ব্যবহার করে আসছি।”
তিনি আরও বলেন, “পারিবারিক ভিটে জমির ধারক আমি এবং এটি হস্তান্তর করা হয়েছিল। আমার বাবা আশুতোষ সেন এবং মা অমৃতা সেনের মৃত্যুর পরও দীর্ঘ ৮০ বছর জমির ব্যবহার একই রয়ে গিয়েছে। জমি ইজারার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত কেউ এই জমির অধিকার দাবি করতে পারে না। প্রশাসনকে তা নিশ্চিত করারও নির্দেশ দিয়েছেন ম্যাজিস্ট্রেট। এর পরেও যদি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ মানতে রাজি না হন তা হলে আমি জুন মাসে শান্তিনিকেতন ফিরে এলে আলোচনা হতে পারে।”

চিঠি পাঠিয়ে আলোচনার জন্য তিন মাস সময় চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ তিন মাসের বদলে জমি উচ্ছেদের জন্য মাত্র ১৫ দিনের সময়সীমা বেধে দিলেন। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের পাল্টা দাবি, দখলদার উচ্ছেদ আইন ১৯৭১ সালের ১০ ধারায় বলা আছে, যিনি ইজারাদাতা, তিনিই জমির মালিক। তিনি জমির হস্তান্তর, উত্তরাধিকারী উইল করতে পারবেন না। ব্যতিক্রম শুধুমাত্র বিশ্বভারতীর আজীবন সদস্যদের। অমর্ত্য সেন বিশ্বভারতীর আজীবন সদস্য নন, সদস্য হলে ইজারাদাতা হিসেবে স্বীকৃত হতেন।
বিশ্বভারতী শতবর্ষের প্রাচীন প্রতিষ্ঠান। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে রেখেছেন অমর্ত্য সেন, বলেও দাবি করা হয়। জমি উদ্ধারের জন্য বিশ্বভারতী যে অনড় মনোভাব নিয়েছে তা বেশ পরিষ্কার। যদিও এই উচ্ছেদ নোটিশ প্রসঙ্গে অমর্ত্য সেন অথবা তার আইনজীবীর কোন উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি।