জয়পুরহাট-২ আসনের ক্ষেতলালে গণসংযোগ শেষে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মাহফুজ চৌধুরী অবসর তার নির্বাচনী ক্যাম্পের সামনে আসলে নৌকার নেতাকর্মীরা তাকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর আহত হয়ে জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন মাহফুজ চৌধুরী।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর ক্ষেতলাল পৌরশহরের ইটাখোলা বাজারের সামনে এই ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনার প্রতিবাদে মাহফুজ চৌধুরীর নেতাকর্মীরা জেলা রির্টানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। পরে জেলা রির্টানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সালেহীন তানভীর গাজী ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ক্ষেতলাল উপজেলার ইটাখোলা বাজারে নৌকা ও কাঁচি প্রতীকের প্রার্থীরা মুখোমুখি নির্বাচনী ক্যাম্প করেছেন। মঙ্গলবার বিকেলে গোলাম মাহফুজ চৌধুরী অবসর কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ইটাখোলা বাজারে গণসংযোগ করে সন্ধ্যার দিকে তার কাঁচি মার্কার ক্যাম্পে আসেন। এসময় নৌকা ও কাঁচি প্রতীকের কর্মীরা পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিচ্ছিলেন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মাহফুজ চৌধুরী হাতাহাতির ঘটনা থামাতে গেলে তাকে লাথি ও কিল-ঘুষি মারা হয়। সে সময় গোলাম মাহফুজ চৌধুরীকে তার কর্মী-সমর্থকেরা উদ্ধার করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে ।
স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মাহফুজ চৌধুরী অবসর অভিযোগ করে বলেন, আমি ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তাইফুল ইসলাম তালুকদারসহ কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বিকেলে গণসংযোগ করে ইটাখোলা বাজারে আমার কাঁচি মার্কার ক্যাম্পে গেলে নৌকা মার্কার কর্মী ক্ষেতলাল উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ক্ষেতলাল পৌরসভার সাবেক মেয়র সিরাজুল ইসলাম বুলুর নেতৃত্বে আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। শত-শত মানুষের সামনে আমাকে সড়কে ফেলে মারধর করা হয়। আমার মুজিব কোট ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। আমার পকেট থেকে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা লুট করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রতিদিন আমার কর্মী-সমর্থকদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এতে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
তবে সিরাজুল ইসলাম ইসলাম বুলু স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মাহফুজ চৌধুরীর আনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা গণসংযোগ শেষে ইটাখোলা বাজারে নৌকা মার্কার নির্বাচনী ক্যাম্পে বসে ছিলাম। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মাহফুজ চৌধুরীর সঙ্গে থাকা ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তাইফুল ইসলাম তালুকদার নৌকা প্রতীকের কর্মী জুলফিকার আলী চৌধুরীকে দেখে কটুক্তি করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার লোকজনেরা আমাদের কর্মীদের মারধর করেন। এতে নৌকার কর্মী জামাল উদ্দিন (৪৪) ও আবির হোসেন (২৬) আহত হয়েছেন। তাদের ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ক্ষেতলাল থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বলেন, কটুক্তি করার জের ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এ ঘটনায় এখনও কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সালেহীন তানভীর গাজী বলেন, মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।