দীর্ঘ ৮ বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিনেটের শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১৬ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ক্লাবে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার ২১ সেপ্টেম্বর জাবির সিনেট নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু হাসান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, সিনেট নির্বাচনের সাময়িক ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৪ সেপ্টেম্বর, সাময়িক ভোটার তালিকার ব্যাপারে আপত্তি দাখিলের শেষ সময় ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টা পর্যন্ত, চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ ২৭ সেপ্টেম্বর, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২ অক্টোবর বিকেল ৪টা পর্যন্ত, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ৪ অক্টোবর পর্যন্ত, বৈধ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ৫ অক্টোবর, প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৮ অক্টোবর বিকেল ৪টা পর্যন্ত এবং ৯ অক্টোবর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আইন- ১৯৭৩ এর ১৯(১) ধারা অনুসারে ৯৩ জন মনোনীত ও নির্বাচিত সদস্য নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট গঠিত হয়। এর মধ্যে উপাচার্যসহ চারজন এবং সরকার কর্তৃক মনোনীত পাঁচজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও সিন্ডিকেট মনোনীত পাঁচজন গবেষক সিনেটর পদাধিকার বলে নিয়মিত মেয়াদে রয়েছেন। বাকিদের সবার মেয়াদ ইতোমধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে।

অধ্যাদেশের ১৯(১) এর ‘জে’ উপধারা ও ২ ধারা অনুসারে ২০১৫ সালের ১১ অক্টোবরে শিক্ষক প্রতিনিধিদের নির্বাচিত ৩৩ জনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে ২০১৮ সালের অক্টোবরে। অধ্যাদেশের ১৯ (১) এর ‘আই’ ধারা অনুযায়ী রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েটদের নির্বাচিত প্রতিনিধি ২৫ জনের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে। এতে নিয়ম অনুযায়ী সিনেটের ৫৮টি সদস্যপদে নতুন করে নির্বাচনের প্রয়োজন রয়েছে।
অধ্যাদেশের ১৯(১) এর ‘কে’ ধারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধিদের পাঁচটি পদ বিগত তিন দশক ধরে শূন্য রয়েছে।
এছাড়া সিনেটে স্পিকার মনোনীত পাঁচজন সংসদ সদস্য, রাষ্ট্রপতি মনোনীত পাঁচজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, এবং একাডেমিক কাউন্সিল থেকে পাঁচজন কলেজ অধ্যক্ষ রয়েছেন, যাদের সবার মেয়াদ দু’বছর পূর্বে শেষ হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে, দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থায় জাবির সিনেট নৈতিক বৈধতা হারিয়েছে বলে মন্তব্য করে দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকবৃন্দ।
নির্বাচনকে সামনে রেখে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও ভোটারদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বইছে। এবারের নির্বাচনে ৬ শতাধিক ভোটার তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও সিনেট নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু হাসান চ্যানেল আইকে বলেন, অধ্যাদেশ অনুযায়ী সিনেটরদের দায়িত্ব ততক্ষণ পর্যন্ত বহাল থাকবে, যতক্ষণ না তাদের উত্তরাধিকার নির্বাচিত, মনোনীত ও নিয়োগপ্রাপ্ত হয়। তবে আমরা এখন শিক্ষক প্রতিনিধিদের নির্বাচনের কাজ করছি। শীঘ্রই রেজিস্ট্রার গ্রাজুয়েট প্রতিনিধিসহ অন্যান্য নির্বাচনের আয়োজন করা হবে।
বিজ্ঞাপন