ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে এসে স্বভাবসুলভ শান্তভাবেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন লিটন দাস। শনিবার ম্যাচ, সিরিজে টিকে থাকতে জয়ের বিকল্প নেই। ম্যাচপূর্ব সেই সংবাদ সম্মেলনে একের পর এক প্রশ্ন আসতে থাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে আকস্মিক অবসরে যাওয়া তামিম ইকবালকে ঘিরে। লিটন উত্তর ঠিকঠাক দিয়ে চললেও একপর্যায়ে বিরক্তই হলেন। বললেন, ম্যাচ নিয়ে কথা না হলে লিটনের ‘না থাকাই’ ভালো।
শনিবার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে নামবে বাংলাদেশ। ম্যাচ শুরু দুপুর ২টায়। শুক্রবারের প্রেসমিটে সেই ম্যাচ নিয়ে যতটা ছিল প্রশ্ন, তার চেয়ে বেশি ছিল তামিমের অবসর প্রসঙ্গে।
ক্রিকেটাররা তামিমকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় দিতে চায় কিনা- এমন প্রশ্নে লিটন বলেন, ‘প্রেস কনফারেন্স আগামী কালকের ম্যাচ নিয়ে না হলে লিটন দাসের না থাকা ভালো। এখানে বোর্ড প্রেসিডেন্টকে আবার ডাক দেন। কিংবা কোচকে ডাক দেন। আমি আগামীকালের ম্যাচ নিয়ে এখানে কথা বলতে এসেছি।’
তামিমের অবসরের ঘটনা ম্যাচের আগে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না বলেও টাইগারদের নতুন ওয়ানডে অধিনায়কের মন্তব্য, ‘এমন যদি হতো যে ইনজুরি হয়েছে, আমরা বিকল্প দল খেলতাম। আমার কাছে মনে হয় না এরকম কোনো পরিবর্তন আসবে। সবকিছু একইরকম থাকবে।’
জাতীয় দলের সদ্যসাবেক ক্রিকেটারের সিদ্ধান্ত নেয়ার ব্যাপারে লিটনের ভাষ্য, ‘আমরা কেউ উপলব্ধি করতে পারিনি এমন একটা সিদ্ধান্ত আসবে। তবে এটা সম্পূর্ণ বড় ভাইয়ের সিদ্ধান্ত। উনি এতদিন ধরে বাংলাদেশকে অনেককিছু দিয়েছেন। আমি এবং আমাদের দলের সবাই তার সিদ্ধান্তকে সম্মান করি। আমার মনে হয় সবারই করা উচিৎ। সবার নিজস্ব পরিকল্পনা থাকে।’
‘আমি আজকে আছি কাল ইনজুরি হয়ে গেলে বাংলাদেশ আমাকে মিস করবে না। এটাই স্বাভাবিক। নতুনরা আসতে থাকবে। আমরা চলে যাবো। অবশ্যই উনি যদি থাকতেন, ভালো হতো। নাও হতে পারতো। তবে এখন যেহেতু নাই, বিষয়টা নিয়ে কথা বলারই দরকার নাই। আমার কাছে তাই মনে হয়।’
আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডের আগেরদিন সংবাদ সম্মেলনে তামিম জানান, শতভাগ ফিট না হলেও খেলবেন। ম্যাচ খেলেই বোঝার চেষ্টা করবেন কতটা সেরে উঠেছেন। টাইগার ওপেনারের এমন কথার পর অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। কোচ চণ্ডিকা হাথুরুসিংহে বিসিবি সভাপতিকে ফোনে তামিমের ব্যাপারে নালিশও করেন বলে খবর হয়। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে পরিস্থিতি কেমন হতে পারে তা নিয়েও লিটনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন এমন প্রশ্নের উত্তর দেয়াটা ঠিক হবে না।
‘যেহেতু আগামীকাল খেলা, তাই এই টপিকে যদি কথা না বলি ভালো হবে। এখন আমরা একটা ম্যাচ পিছিয়ে আছি। আমার কাছে বড় বিষয় এখন কীভাবে সিরিজটা জিততে পারি। সিরিজ জয়ের চেয়েও বড় ব্যাপার আগামীকাল কীভাবে ভালো খেলতে পারি। সতীর্থরা সবাই একদিকেই মনোযোগ দিচ্ছে।’
‘বড় ভাই যেতে যেতে একটা কথা বলে গেছেন, দল সবার আগে। আমার কাছে মনে হয় না এটার আর কোনো পয়েন্ট আছে। যেহেতু বিসিবি আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে, শতভাগ নেয়ার চেষ্টা করবো। যা চলে গেছে সেদিকে তাকিয়ে আর লাভ নাই। দেশের জন্য সামনে কী কী করলে ভালো হবে সেটাই করার চেষ্টা করবো।’