ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যকার তিন ম্যাচ টি-টুয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ও শেষটিতে দুটি সুপার ওভার দেখেছে বিশ্ব। রোহিত-রিংকুর ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ২১২ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে ভারত। জবাবে নেমে গুলবাদিনের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে টাই হয় ম্যাচ। সুপার ওভারে গড়ায় লড়াই। প্রথম সুপার ওভার টাই হলেও দ্বিতীয়টিতে ১০ রানে জয় পেয়েছে ভারত। তিন ম্যাচে তিন জয়ে সফরকারীদের হোয়াইটওয়াশ করেছে ভারত।
বেঙ্গালুরুতে টস জিতে আগে ব্যাটের সিদ্ধান্ত নেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। নির্ধারিত ওভার শেষে ৪ উইকেটে ২১২ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে ভারত। জবাবে নেমে নির্ধারিত ওভার শেষে ৬ উইকেটে ২১২ রান তুলে ম্যাচ টাই করে আফগানরা।
ম্যাচ সুপার ওভারে গড়ালে আগে ব্যাট করে আফগানিস্তান। মুকেশ কুমারের বলে ১ উইকেট হারিয়ে ১৬ রান তোলে তারা। জবাবে নেমে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ওভারে ১৬ রান তুলে টাই করে ভারত। পরে দ্বিতীয় সুপার ওভারে আগে ব্যাট করে ফরিদ আহমদের ওভারে এক বল বাকী থাকতেই দুই ব্যাটারকে হারিয়ে ১১ রানে ভারত। জবাবে নেমে রবি বিষ্ণুইর তিন বলে ১ রান তুলে দুই ব্যাটারকে হারিয়ে গুটিয়ে যায় আফগানদের ইনিংস।
তিন ম্যাচ টি-টুয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ও শেষটিতে শুরুর হাসিটা ছিল আফগানদের। ২২ রানেই ভারতের ৪ উইকেট তুলে নেয় তারা। ধুঁকতে থাকা স্বাগতিকদের হাল ধরেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা, তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন রিংকু সিং। ঝড়ো ব্যাটিং করে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রোহিত। একমাত্র ব্যাটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টিতে পাঁচটি শতকের অনন্য রেকর্ডের মালিক এখন রোহিত। চারটি করে সেঞ্চুরি করে রোহিতের পরে অবস্থান করছেন ভারতের সূর্যকুমার যাদব ও অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। এছাড়া বাবর আজম, সাবাউন দাবিজি ও কলিন মুনরো তিনটি করে সেঞ্চুরি পেয়েছেন।
ব্যাটে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয় ভারত। ২.৩ ওভারে দলীয় ১৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় স্বাগতিক দলটি। যশ্বী জয়সওয়াল ফিরে যান ৪ রান করে। পরের বলেই ‘গোল্ডেন ডাক’ মেরে ফিরে যান বিরাট কোহলি। চতুর্থ ওভারের শেষ বলে দলীয় ২১ রানে শিবাম ডুবের উইকেট হারায় ভারত। তিন বল পরেই চতুর্থ ব্যাটারকে ফেরান আফগানরা।
এরপর উইকেট টিকিয়ে রেখে চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে রান তুলতে থাকেন রোহিত ও রিংকু। ৬৪ বলে শতরান পূর্ণ করেন রোহিত। সেঞ্চুরির পথে ছিল ১০টি চার ও ৬টি ছক্কার মার। ৩টি ছক্কা ও দুটি চারে ৩৬ বলে ফিফটি করেন রিংকু।
শেষ ওভারে আফগান বোলার করিম জানাতকে তুলোধুনো করেন দুই ব্যাটার। পাঁচটি ছক্কা ও এক চারে ৩৬ রান তুলে নেন রোহিত ও রিংকু। জানাতের ওভারে স্ট্রাইকে ছিলেন রোহিত। প্রথম বলে স্কয়ার লেগ দিয়ে চার হাঁকান রোহিত। পরের বলে ‘নো’ দিয়ে বসেন জানাত। ফুলটস বানিয়ে ছক্কা মারেন ভারতের অধিনায়ক। পরের বলে লংঅনের উপর দিয়ে আবারও বাউন্ডারি পার করেন রোহিত। ওভারের তৃতীয় বলে সিঙ্গেল নিয়ে রিংকুকে পাঠান স্ট্রাইকে। তার আগে আসে ১৮ রান। শেষ তিন বলে তিন ছক্কায় আরও আঠারো রান যোগ করেন রিংকু।
৬৯ বলে ১১টি চার ও ৮টি ছক্কায় ৬৯ বলে ১২১ রান করেন রোহিত। দুটি চার ও ছয়টি ছক্কায় ৩৯ বলে ৬৯ রান করেন রিংকু।
আফগানদের হয়ে ফরিদ আহমেদ আহমদ নেন তিন উইকেট। এছাড়া আজমতউল্লাহ ওমরজাই নেন একটি।
জবাবে নেমে আফগানদের ভালো সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। উদ্বোধনী জুটিতে তারা ৯৩ রান তোলেন। ১১তম ওভারের শেষ আফগানদের জুটি ভাঙেন কুলদীপ যাদব। ওয়াশিংটন সুন্দরের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান গুরবাজকে। চারটি ছক্কা ও তিনটি চারে ৩২ বলে ৫০ রান করেন আফগান ওপেনার।
১৩তম ওভারে দলীয় ১০৭ রানে জোড়া আঘাত হানেন ওয়াশিংটন সুন্দর। তৃতীয় বলে জাদরানকে স্টাম্পিং করেন সাঞ্জু স্যামসন। চারটি চার ও এক ছক্কায় ৪১ বলে ৫০ রান করেন জাদরান। পরের বলে রবি বিষ্ণুইর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান দুই বলে দুই রান করা আজমতউল্লাহ ওমরজাই।
এরপর ঝড় তোলেন মোহাম্মদ নবী। দুই চার ও তিন ছক্কায় ১৬ বলে ৩৪ রান করে ১৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ১৬৩ রানে ওয়াশিংটনের তৃতীয় শিকার হন তিনি। পরের ওভারেই করিম জানাতকে ফিরে যান রানআউট হয়ে, দুই বলে দুই রান করে। ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ১৮২ রানে তিন বলে ৫ রান করা নাজিবুল্লাহ জাদরানকে ফেরান আভেশ খান।
এরপর ঝড় তোলেন গুলবাদিন। চারটি করে চার ও ছক্কা হাঁকিয়ে ২৩ বলে ৫৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে ম্যাচ টাই করেন তিনি। পরে লড়াই গড়ায় সুপার ওভারে।