হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে থাকা আদানি গ্রুপের বিপুল পরিমাণ শেয়ার বিক্রির পরও তাদের শেয়ার মূল্যে আজ আবারো বড় ধরণের ধস নেমেছে। এতে আদানি গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শেয়ারমূল্য প্রায় ৭২ বিলিয়ন ডলার কমেছে।
গতকাল ভারতের শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল হোল্ডিং কোম্পানি (আইএইচসি)। এর একদিন পরই প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার মূল্য হারায় প্রতিষ্ঠানটি।
শেয়ারমূল্য হ্রাস অব্যাহত থাকার ঘটনায় আজ বুধবার আদানি গ্রুপের অঙ্গসংস্থান আদানি এন্টারপ্রাইজ শেয়ার মূল্য কমে ২ শতাংশ এবং আদানি ট্রান্সমিশন ৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। আদানি পাওয়ারের দাম পড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ এবং আদানি টোটাল গ্যাসের বাজার মূল্য সর্বচ্চো ১০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
নিউইয়র্কভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ গত সপ্তাহে এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি গৌতম আদানির প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। এতে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে কর্পোরেট জগতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ধোঁকাবাজির অভিযোগ আনা হয়। তাদের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজার জালিয়াতি, কারসাজি করে শেয়ারের দাম বৃদ্ধিসহ তাদের ঋণের পরিমাণ ও তাদের ট্যাক্স হেভেন ব্যবহার নিয়েও তথ্য প্রকাশ করা হয় প্রতিবেদনটিতে। এই ঘটনার পর পরই আদানি গ্রুপের শেয়ার বাজারে বড় ধরণের ধস নামে।
যদিও আদানি গ্রুপের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করে তাদের ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করা হয়। বলা হয়, এটা শুধু নির্দিষ্ট কোনও সংস্থার উপর আক্রমণ নয়, বরং ভারতের উপর পরিকল্পিত আক্রমণ। ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা, অখণ্ডতা ও গুণমান এবং ভারতের উন্নতি ও স্বপ্নের উপর হামলা এটা।
আদানি গ্রুপ অভিযোগ করেছে, হিনডেনবার্গ ভারতের ব্যবসায়িক নিয়ম বা আইনগুলো ভালোমত জানে না। তাই তারা বিষয়গুলো বুঝতে পারছে না। এর জবাবে জবাবে হিন্ডেনবার্গ বলেছে, আমাদের কাছে প্রতারণা মানে প্রতারণাই, এটাকে জাস্টিফাই করার সুযোগ নাই।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ আদানি গ্রুপ গত কয়েক বছরে অস্বাভাবিকভাবে ফুলেফেঁপে উঠেছে। পৃথিবীর শীর্ষ ধনীদের তালিকায় ৩ নম্বরে উঠে আসেন গৌতম আদানি। হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশের পর আদানি গ্রুপে শেয়ারের দাম পড়ে যাওয়ায় তিনি শীর্ষ ধনীর তালিকায় ৩ নম্বর অবস্থান থেকে ১১ নম্বরে নেমে গেছেন।