কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগানোর ঘটনায় অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীদের আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই ভূক্তভোগী রোহিঙ্গারা দাবি করেছিলেন, মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্টি আরসার সদস্যদের আগুন লাগাতে দেখেছেন তারা।
উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, সোমবার রাতে উখিয়া উপজেলার বালুখালী ১১ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের বি-৪ ব্লকের বাসিন্দা মো. সেলিম বাদী হয়ে দায়ের মামলাটি নথিভূক্ত করা হয়েছে। মামলায় আসামিদের নাম অজ্ঞাত উল্লেখ করার পাশাপাশি আসামির সংখ্যাও উল্লেখ করা হয়নি বলে জানান ওসি।
গত ৫ মার্চ দুপুর আড়াইটায় উখিয়া উপজেলার বালুখালী ১১ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের এ, বি ও ডি ব্লকে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। পরে তিন ঘন্টা চেষ্টার পর ফায়ার সার্ভিসের ১১ টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। এতে ২ হাজার ৮০৫ টি বসত ঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা সম্পূর্ণ পুড়ে যায় এবং ১৫ হাজারের বেশী মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঘটনার পরদিন অতিরিক্ত জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ানকে প্রধান করে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন।
তদন্ত কমিটি রোববার বিকালে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। এতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিত ও উদ্দ্যেশ প্রণোদিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতে এ ধরণের ঘটনা রোধে তদন্ত কমিটি ১০ টি সুপারিশ করে। পাশাপাশি ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত এবং ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য মামলা দায়ের করারও সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি।
ঘটনার পরপরই ভূক্তভোগী রোহিঙ্গা দাবি করেছিলেন, ঘটনাটি পরিকল্পিত ও নাশকতামূলক। রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে ভীতি ছড়িয়ে আধিপত্য বিস্তারের উদ্দেশ্যে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্টি আরসা’র সদস্য আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটিয়েছে। আগুন লাগানো ওইসব দুষ্কৃতিকারিরা আশ্রয় শিবিরটির বাসিন্দা নয় এবং তারা বহিরাগত।
ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, উখিয়ার বালুখালী ১১ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সোমবার রাতে মো. সেলিম নামের এক রোহিঙ্গা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে দায়ের মামলাটি পুলিশ নথিভূক্ত করেছে। মামলায় আসামিদের নাম অজ্ঞাতের পাশাপাশি সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি।
মামলাটি এখন তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে এবং আদালতে দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া চেষ্টা করা হবে জানান ওসি।