রাজধানীর বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে একই পরিবারের মা ও দুই শিশু সন্তানসহ নোয়াখালী পৌরসভা, সদর এবং সেনবাগ উপজেলার ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
শুক্রবার (১ মার্চ) জুমার নামাজের পর নোয়াখালী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড মাইজদীর আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে সমাধিস্থ করা হয় মোস্তফা কন্ট্রাক্টর বাড়ির আশিক আহমেদের স্ত্রী নিহত নাজিয়া আক্তার (৩১), ছেলে আরাহান (৮) ও আদিয়ান (৬) -এর মৃতদেহ।
অপর নিহতরা হচ্ছেন, জেলার সদর উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের হাকিমপুর গ্রামের দত্তের বাড়ির তারেক আহমেদের স্ত্রী মেহরান কবির দৌলা (২৮) ও সেনবাগ উপজেলার ডমুরুয়া ইউনিয়নের মইশাই গ্রামের দর্জিপাড়ার তাকিয়া বাড়ির আবুল খায়েরের ছেলে মোহাম্মদ আসিফ (২৪)।
একই পরিবারের নিহত তিনজনের স্বজন মো. রাসেল জানান, গত ১৫/১৬ বছর ধরে ব্যবসার সুবাদে ঢাকা থাকেন আশিক। স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে বেইলি রোডের একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন তিনি। কয়েকদিন আগে মালয়েশিয়া থেকে আশিকের দুই বন্ধু ঢাকায় আসে। তাদের পরিবারের সদস্যদের খাওয়ানোর জন্য বৃহস্পতিবার রাতে দুই সন্তানসহ মোট ৬ জন বেইলি রোডের একটি রেস্টুরেন্টে যান। যদিও তাদের সাথে আশিকের যোগ দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু আগুন লাগার আগ পর্যন্ত সেখানে যাননি আশিক। পরে ফিনল্যান্ড থেকে আমাদের এক আত্মীয় বিষয়টি জানালে আমরা আশিক ও নাজিয়ার মোবাইলে অনেকবার কল দিলেও তারা কেউ ধরেননি। পরে নিশ্চিত হয় আগুনে নাজিয়া ও তার দুই সন্তান আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যায়।
দাদপুর ইউনিয়নের হাকিমপুর গ্রামের তারেক আহমেদের স্বজন মো. শামীম বলেন, তারেক ঢাকায় ব্যবসা করে, তার স্ত্রী মেহরান কবির দৌলা আইএফআইসি ব্যাংকের আইটি বিভাগে চাকরি করতেন। বৃহস্পতিবার রাতে ছোট বোন মাহি ও তার এক বান্ধবীকে নিয়ে বেইলি রোডের একটি রেস্টুরেন্টে যান দৌলা। অগ্নিকাণ্ডের পর ছোট বোনের বান্ধবী ভবনের জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে বের হতে পারলেও আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যায় দৌলা ও মাহি। মাহির গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়।
অপরদিকে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের একটি গ্যাস সিল্ডিার দোকানে চাকরি করতেন নোয়াখালীর সেনবাগের আসিফ। ওই ভবনটিতে অগ্নিকাণ্ডের সময় দগ্ধ হয়ে মারা যান তিনি।