দ্বিতীয় দফায় প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক দুই গ্রুপ সিক্সটিনাইন ও সিএফসি। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪ টায় শাহজালাল ও শাহ আমানত হলের সামনে এই সংঘর্ষ হয়।
সরেজমিনে পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে দেখা যায়, সংঘর্ষে লিপ্ত শাখা ছাত্রলীগের উভয় গ্রুপের ৪০-৫০ জন আহত হয়েছে।
চবি মেডিকেল সেন্টারের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা আবু তৈয়ব চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘১০-১২ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে ৪ জন গুরুতর আহত হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
চবি প্রক্টর নুরুল আজিম শিকদার বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদেরকে একবার হলে ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু রব হল থেকে আরও শিক্ষার্থী এসে পড়ায় সংঘর্ষ পুণরায় শুরু হয়। আমরা দু-পক্ষের মধ্যে সমঝোতার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। কিন্তু শিক্ষার্থীরা এতটাই অসহিষ্ণু যে, তারা আমাদের কোনো কথাই শুনতে চায় না।’
এ বিষয়ে সিএফসি পক্ষের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মির্জা খবির সাদাফ খান বলেন, ‘বর্তমানে সিক্সটি নাইনে কোন নেতা নেই। তাদের কেউ কাউকে মানে না। আমাদের কর্মীরা আজ জুমার নামাজ পড়ে ফেরার সময় সিক্সটিনাইনের কর্মীরা তাদের দিকে ইটপাটকেল ছুঁড়ে মারতে থাকে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই আবার ঝামেলা শুরু হয়। আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে বিষয়টি জানাচ্ছি।’
অন্যদিকে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিক্সটিনাইনের নেতা সাঈদুল ইসলাম সাঈদ বলেন, ‘গতকালকে স্টেশনের এক ঘটনা কেন্দ্র করে আমাদের ১৭-১৮ সেশনের এক কর্মীর সাথে ওদের ২০-২১ সেশনের এক কর্মীর বাকবিতণ্ডা হয়। এ নিয়ে গতকাল সমাধান করে আমরা হলে ঢুকে গেলেও সিএফসির কর্মীরা আমাদের কর্মীদের বিভিন্নভাবে উস্কানি দিতে থাকে।’
তিনি আরও বলেন, আমরা কখনোই চাই না শিক্ষার পরিবেশ ব্যহত হোক। কোনো কমিটি না থাকায় শাখা ছাত্রলীগের কর্মীদের কোনো জবাবদিহিতার জায়গা নেই। তাই তুচ্ছ তুচ্ছ বিষয় বড় হয়ে যাচ্ছে। আমাদের অভিভাবক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি/সম্পাদক (সাদ্দাম-ইনান) চবি ছাত্রলীগের কমিটি দিয়ে দিলে একটা জবাবদিহিতার জায়গা তৈরি হবে।’
এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) আনুমানিক সন্ধ্যায় ৭ টার দিকে সংঘর্ষে জড়ায় শাখা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক ২ গ্রুপ সিক্সটিনাইন ও সিএফসি। সিএফসির ২০-২১ সেশনের একজন কর্মী কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সিক্সটিনাইনের ১৯-২০ সেশনের একজন কর্মীর কলার চেপে ধরে এবং দুজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে উভয় কর্মী তাদের নিজস্ব হলে ফিরে গেলে এ ঘটনার জের ধরে সংঘর্ষ বাধে ২ গ্রুপের মধ্যে।
দফায় দফায় চেষ্টা করার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি রাত আনুমানিক সাড়ে দশটার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। এছাড়া ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশও মোতায়েন করা হয়।