রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার পানিতে ডুবে ৩ জন শিশুসহ মোট ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও বন্যার কারণে বেশকিছু ঘরবাড়িসহ কৃষি জমি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
গতকাল ১০ আগস্ট বৃহস্পতিবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃতরা হলেন, বাঘাইছড়ি উপজেলার খেদারমারা ইউনিয়নের হীরারচর এলাকার বাসিন্দা ত্রিপূর্ণা চাকমার ছেলে জুনি চাকমা (৭), বাঘাইছড়ি পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের হাজী পাড়ার মহসিন মিয়ার ছেলে মো. জুয়েল (৭), ৪নং ওয়ার্ড বঙ্গলতলী ইউনিয়নের অরুন বড়ুয়ার ছেলে রাহুল বড়ুয়া (১০) এবং সাজেক ইউনিয়নের মাচালং দিপুপাড়া এলাকার সরবিন্দু ত্রিপুরা ছেলে কাওলা ত্রিপুরা (৩৮)।
এ বিষয়ে বাঘাইছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ ইশতিয়াক আহমেদ জানান, বাঘাইছড়ি উপজেলার খেদারমারা ইউনিয়নের হীরারচর এলাকার বাসিন্দা ত্রিপূর্ণা চাকমার ছেলে জুনি চাকমা গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পানিতে ডুবে মারা যান। বাঘাইছড়ি পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের হাজী পাড়ার মহসিন মিয়ার ছেলে জুয়েল গত মঙ্গলবার পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে যান। এরপর স্থানীরা তার মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দিলে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
অরুন বড়ুয়ার ছেলে রাহুল বড়ুয়া বৃহস্পতিবার দুপুরে বন্যার পানিতে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে যায়। পরে বিকেল ৩টার দিকে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া সাজেক ইউনিয়নের মাচালং দিপুপাড়া এলাকার সরবিন্দু ত্রিপুরা ছেলে কাওলা ত্রিপুরার মরদেহ দেখে স্থানীয়রা সাজেক থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে তার কাদা মোড়ানো লাশ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে বাঘাইছড়ি উপজেলার নির্বাহী অফিসার রুমানা আক্তার জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবার প্রতি ২০ হাজার টাকা সহায়তার পাশাপাশি খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন, বন্যার পানিতে একসাথে এতো মৃত্যুর খবর খুবই বেদনাদায়ক। তিনি পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সকলকে ধৈর্য্য ধরে এই দুর্যোগ মোকাবেলা করার আহ্বান জানান।
রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলা ছাড়াও জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি ও বরকল উপজেলার নিম্নাঞ্চলের অনেক বাড়িঘর ডুবে গেছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করছে প্রশাসন। এবারের বন্যায় এই জেলার ১০ উপজেলায় ৩ হাজার ১৩৫ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলাকৃষি বিভাগ।