জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বড় ভাই সালেহ মোহাম্মদকে (৬৯) হত্যা মামলায় ছোট ভাইসহ ১৭ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত। একই সাথে পাঁচজনের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেয়া হয়েছে।
সালেহ মোহাম্মদ হত্যা মামলার ১৪ বছর পর বুধবার ৭ জানুয়ারি দুপুরে জয়পুরহাটের অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক আব্বাস উদ্দীন ২০ জন আসামির উপস্থিতি ও ২ আসামির অনুপস্থিতিতে এ আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন: আরিফুল প্রাং, আবু নাসের প্রাং, ডা: মো: শাহজাহান আলী, হাদিউজ্জামান প্রাং, আশরাফ আলী প্রাং, মোহাম্মদ আলী প্রাং, লাল মোহাম্মদ লাল, মোহাম্মদ আলী প্রাং, জহির প্রাং, শামছুল আলম প্রাং, সায়েম উদ্দিন প্রাং, ওবাইয়দুল প্রাং, সইম প্রাং, আবু সাঈদ প্রাং, রহিম প্রাং, আবু বক্কর প্রাং, বানু বেগম ও সাহেরা বেগম।
এদের মধ্যে আদালতে উপস্থিত ছিলেন ১৫ জন। আশরাফ আলী প্রাং ও আবু সাঈদ প্রাংকে পলাতক দেখানো হয়েছে। বাকি ৫ জনকে খালাস দেয়া হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২ মে সকাল ৮টার দিকে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার আয়মা রসুলপুর চকপাড়া গ্রামের সালেহ মোহাম্মদ ফসলি মাঠ থেকে শ্যালো মেশিনের ঘর ভেঙে ছাউনির টিন নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের পুর্ব শত্রুতার জের ধরে ছোট ভাই মোহাম্মদ আলী প্রাং ও কয়েকজন দলবদ্ধভাবে তাকে গাছের সাথে হাত-পা বেঁধে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় সালেহ মোহাম্মদ পানি খেতে চাইলে মুখে মরিচ গুড়ার পানি ঢেলে দেয়া হয়। আসামিদের ভয়ে কেউ তাকে উদ্ধার করতে সাহস পাননি। একসময় ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই আজিজুল হক প্রাং ২০০৯ সালের ২ মে ১৯ জনের নাম উল্লেখ ও ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে পাঁচবিবি থানায় একটি মামলা করেন।
পরবর্তীতে মামলার তৎকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মুমিনুল হক ২০০৯ সালের ২৪ জুন এজাহার নামীয় আসামীর সাথে তিন জনের নাম তদন্তে বর্ধিত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ বুধবার আদালতের বিচারক এ রায় দেন।
মামলার সরকারি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল পি.পি ও উদয় সিংহ এ.পি.পি। আর আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন, নন্দকিশোর আগরওয়ালা ও হেনা কবির।