কলকাতার কলেজ স্কয়ারে চলছে ১১তম বাংলাদেশ বইমেলা। সপ্তাহব্যাপী এই বইমেলার সমাপ্তি আগামি বুধবার (১৩ ডিসেম্বর)। বইমেলাকে কেন্দ্র করে কলেজ স্কয়ারে প্রতিদিনই থাকছে বিভিন্ন সেমিনার কিংবা আলোচনা অনুষ্ঠান। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে অনুষ্ঠিত হলো শিশু সাহিত্য বিষয়ক আলোচনা সভা।
আলোচনার বিষয় ছিলো ‘শিশুদের জন্য নতুন কিছু লেখা হচ্ছে, নাকি অতীতের ছায়া অনুসরণ?’ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত শিশু সাহিত্যিক ও চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ ও লেখক পবিত্র সরকার। আলোচনা অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন রঞ্জন সেন। এছাড়াও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছড়াকার ও শিশুসাহিত্যিক আসলাম সানী, হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত এবং চুমকি চ্যাটার্জী সহ বাংলাদেশ ও ভারতের খ্যাতিমান শিশুসাহিত্যিক এবং প্রকাশক।
প্রাযুক্তিক পৃথিবীতে বই পড়ার বিষয়টি হুমকির মুখে। প্রায়শই অভিযোগ শোনা যায়, আজকের শিশুরা গেজেটে যতোটা আগ্রহী বইয়ে ততোটা নয়। আসলেই কি তাই?
নতুন কিছুকে গ্রহণের পাশাপাশি বইয়ের আবেদনও যে ফুরিয়ে যায়নি, আলোচনা অনুষ্ঠানে সেই উদাহরণ টেনে এনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিশু সাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগর বলেন, “এখনকার শিশুরা আধুনিক গেজেট পছন্দ করছে, সেইসাথে বইও পছন্দ করছে। আমার বড় মেয়ের এক কন্যা ও এক পুত্র। তাদের একজনের বয়স সাড়ে তিন বছর, এবং অন্যজনের আড়াই বছর। তারা এখন থেকেই বইকে খেলনার মতো ভালোবাসে। আমার মনে হয়, আমাদের পরের তিন-চারটা জেনারেশনও কিন্তু বইয়ের সাথেই আছে।
তিনি বলেন, মা-বাবার পরম্পরা ধরে যতো যাই হোক সাহিত্যকে, বইকে আমার সঙ্গে রেখেছি। আমি মনে করি, আমার জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ ও বন্ধু হলো বই। পরবর্তীতে আমার যখন দুটি কন্যা হলো, তাদেরকেও আমি বোঝানোর চেষ্টা করেছি যে বই হলো পরম বন্ধু। তাদের ছোটবেলা থেকেই দেখেছি, তারা খেলনার দোকানের পাশাপাশি বইয়ের দোকানেও তাদের সমান যাতায়াত ছিলো।
আলোচনা অনুষ্ঠানে শিশুদের জন্য আগামিতে আরো সুন্দর সুন্দর প্রকাশনার উদ্যোগ নেয়ারও দাবি করেন বক্তারা। এরআগে গেল সপ্তাহে বাংলাদেশ বইমেলার উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বইয়ের আবেদন নিয়ে সেদিনও তিনি বলেছিলেন,“সময় যতই এগোক, যতই ইন্টারনেট আর পিডিএফে লেখা আসুক, বই থাকবেই। রাষ্ট্র থাকুক অথবা না থাকুক, বই থাকবে।’