একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে কয়টি সংস্থাকে পর্যবেক্ষক হিসেবে কার্ড দিয়েছে নির্বাচন কমিশন, তার মধ্যে ৯টি সংস্থার পর্যবেক্ষণে ঘোর আপত্তি জানিয়েছে আওয়ামী লীগ।
মঙ্গলবার ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মিডিয়া সেন্টার উদ্বোধনকালে এ আপত্তির কথা জানান, আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম।
তিনি বলেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষক নিয়ে যা হচ্ছে সেটি শুধু নির্বাচন সম্পর্কিত বাংলাদেশের মূল আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিওর লঙ্ঘনই নয়, আন্তর্জাতিক আইন ও রীতি নীতির লঙ্ঘন। নির্বাচন পর্যবেক্ষক অনুমতি প্রদান আরপিও অনুচ্ছেদ ৯১সিতে বলা হয়েছে রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির সাথে সম্পৃক্ত নয় এমন সংস্থাকে পর্যবেক্ষক হিসেবে অনুমতি দেয়া যাবে। অথচ আমরা লক্ষ করছি আইনের এ বিধান লঙ্ঘন করে বিএনপি-জামায়াতের সরাসরি সম্পৃক্ত বস তাদের লক্ষ-উদ্দেশ্যে সমর্থনকারী ও সহানুভূতিশীল ১১টি সংস্থাকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
এইচ টি ইমাম এসময় এই ৯টি সংস্থার নাম তুলে ধরেন। সংস্থাগুলো হলো, ডেমোক্রেসি ওয়াচ, খান ফাউন্ডেশন, লাইট হাউস, বাংলাদেশ মানবাধিকার সমন্বয় পরিষদ, জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন, নবলোক, কোস্ট ট্রাস্ট, শরীয়তপুর ডেভেলপমেন্ট, নোয়াখালী রুরাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি। এই ৯টি সংস্থা ১৪০টি সংসদীয় আসনে মোট ৬৫৮৫ জন পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে। তিনি বলেন, এদের প্রত্যেকেই বিএনপি-জামায়াতে সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী। নির্বাচন নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই এটি করা হয়েছে। আমরা আরপিও’র ৯১সি অনুচ্ছেদের বিধানের আলোকে ৯টি সংস্থার পর্যবেক্ষণ অনুমতিপত্র বাতিল করার দাবি করছি।
বিদেশি পর্যবেক্ষক সংস্থা এ্যানফ্রেলের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা বলেন, বিদেশি পর্যবেক্ষক সংস্থা এ্যানফ্রেল নিয়ে যা বলা হচ্ছে সেটি সত্য নয়। আরপিও’র ৯১ সি অনুযায়ী এ সংস্থাটিও অনুমতি পাওয়ার যোগ্য নয়। এই সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি হচ্ছে অধিকার। অধিকারের চেয়ারম্যান আদিলুর রহমান শুভ্র। যিনি সরাসরি বিএনপি-জামায়াতে রাজনীতির সাথে যুক্ত। তা সত্ত্বেও এ্যানফ্রেলের ৬জন প্রতিনিধি পর্যবেক্ষক নির্বাচনে পর্যবেক্ষণের অনুমতি পেয়েছে।
কোনো বিদেশি রাষ্ট্র কি তার দেশের আইন লঙ্ঘন করে বিদেশি কোনো ব্যক্তিকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অনুমতি দেবে? এমন প্রশ্ন রাখেন ইমাম।
এসময় তিনি ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামালের সমালোচনা করে বলেন, ড. কামাল সশস্ত্রবাহিনী নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছে তা আপত্তিজনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন। সশস্ত্রবাহিনীকে দেশের সংবিধান ও আইন অনুযায়ী মোতায়েন করা হয়েছে। আমাদের সকলকে সশস্ত্রবাহিনীর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করে কোনো বক্তব্য বা বিবৃতি প্রদান থেকে বিরত থাকতে হবে।
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের নির্ধারিত বৈঠক প্রসঙ্গে এইচ টি ইমাম বলেন, বৈঠকে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা নারায়ণগঞ্জের এক পুলিশ কর্মকর্তাকে ‘জানোয়ার’ বলে সম্বোধন করেন। এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) তাদের সংযত হয়ে কথা বলার অনুরোধ জানালে ড. কামাল হোসেন সিইসির সঙ্গে টেবিল চাপড়ে কথা বলেন। তারা নির্বাচন কমিশনের সাথে বৈঠক বয়কট নয়, মাস্তানি করে গেছেন।
আওয়ামী লীগের মিডিয়া উপ-কমিটির সদস্য সচিব কাশেম হুমায়ুনের সভাপতিত্বে সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, সিনিয়র সাংবাদিক সুভাষ সিংহ রায়, কবি তারেক সুজাত প্রমুখ।