ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের এতো দহরম মহরম সত্ত্বেও বিগত ৮ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত থেকে এক বালতি পানিও আনতে পারেননি বলে দাবি করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার এবারের সফরেও বাংলাদেশের মানুষের বহু প্রতিক্ষিত তিস্তা চুক্তির বিষয়ে কোন এজেন্ডা নেই। বিগত আটটি বছর ধরে আওয়ামী লীগ ঘোষণা দিয়ে আসছে যে, তারা ভারতের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি করতে যাচ্ছে। বন্ধুত্বের এত দহরম মহরম অথচ শেখ হাসিনা ভারত থেকে এক বালতি পানিও আনতে পারেননি আট বছরে। কিন্তু বছর যায় বছর আসে আর বাংলাদেশের অবৈধ সরকার শুধু একতরফাভাবে ভারতকে সবকিছু দিয়েই যাচ্ছে।
রিজভী বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ন্যায্য পানির হিস্যা বুঝে পাচ্ছে না। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকতে সার্বভৌমত্বকে ক্ষয়িষ্ণু করে ভারতকে সব কিছু উজাড় করে দিয়ে যাচ্ছেন বিনিময়ে কিছুই পাননি। পরদেশের কাছে সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে পারিশ্রমিক হিসেবে পেয়েছেন শুধুমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি ফয়সাল আহমেদ সজলকে গত ২ দিন ধরে খুঁজে পাওয়া পাচ্ছে না মন্তব্য করে রিজভী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই তাকে তুলে নিয়ে গেছে বলে তার সহকর্মীরা আশঙ্কা করছে, আমাদেরও বিশ্বাস এভাবে তুলে নিয়ে যাওয়ার সংস্কৃতি আওয়ামী আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর। পুরনো কায়দায় বিরোধী দল নিধনের হাতিয়ার হিসেবে তাকে তুলে নেওয়া হয়েছে।
‘গতরাতেও মাদক নির্মূলের নামে বিচারবর্হিভূতভাবে ৯ জনতে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমগুলো, সোস্যাল মিডিয়াসহ মানবধিকার সংগঠনগুলো বেআইনি মানুষ হত্যার বিরুদ্ধে তুমুল সমালোচনা করলেও এখনও থামছে না বিচারবর্হিভূত হত্যা। গতকাল বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে মাদক ব্যবসার চেয়ে বিচারবহির্ভূত হত্যা ভয়ঙ্কর অপরাধ। আমরা বরাবরই বলছি আমরাও চাই দেশ থেকে মাদক নির্মূল হোক,মাদকের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হোক কিন্তু বিচারবর্হির্ভতভাবে নির্বিচারে মানুষ হত্যা নয়। কিন্তু প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের ধরা হচ্ছে না। গতকালও সরকারের শরীক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশষদূত বলেছেন, মাদক সম্রাটরা সংসদেই আছে তাদের ধরে বিচার করুণ। গণমাধ্যমেও মাদকের গডফাদারদের তালিকা প্রকাশ হচ্ছে। কিন্তু তাদের ধরা হচ্ছে না।’
রিজভীর অভিযোগ, মূলত দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও আসন্ন নির্বাচনের পরিবেশ অনিশ্চিত করে ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার জন্যই বাংলাদেশের জনপদের পর জনপদ রক্তাক্ত করা হচ্ছে। সজলকে গুম করা সরকারের একটি সিগন্যাল। এ ঘটনা সামনে এক ভয়ঙ্কর নৈরাজ্যের আভাসই ফুটে উঠেছে।