প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন: বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর যারা রাস্তায় ব্যারিকেড সৃষ্টি করেছিলো তাদের ওপর গুলি চালায় জিয়াউর রহমান।
৭ মার্চ উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা নির্বোধ তারা ৭ মার্চের ভাষণের মর্ম বুঝবেনা, পাকিস্তানী হানাদাররাও বোঝেনি।
ঐতিহাসিক ৭ মার্চের দিনটি স্মরণ করে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তুলে ধরেন ঐতিহাসিক এ ভাষণের গুরুত্ব। বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পর কোটি বাঙ্গালী যুদ্ধের প্রস্তুতি নিলেও নির্বোধরা এর মর্ম বুঝবে না বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে বাঙ্গালীর হাজার বছরের বঞ্চণা, শোষন, অবহেলার ইতিহাস যেমন বলেছিলেন তেমনি পাকিস্তানী শাষকদের বিরুদ্ধে কিভাবে গেরিলাযুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে হবে, সে কর্মপরিকল্পনাও বলে দিয়েছিলেন। রাজনীতির কবি বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণ ছিলো স্বাধীনতার প্রামাণ্য দলিল।
স্বাধীনতা যুদ্ধে জিয়াউর রহমানের বিতর্কিত ভূমিকার সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমানের সার্বিক ভূমিকার উল্লেখ করে বলেন, ‘২৫ মার্চ চট্টগ্রামে যারা বেরিকেড দিচ্ছিল তাদের অনেককে জিয়াউর রহমান গুলি করে হত্যা করে। শুধু তাই নয়, জিয়া ২৫ ও ২৬ মার্চ দুই দিনই হত্যাকাণ্ড চালায়। ২৭ তারিখ সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র নামাতে গিয়েছিল জিয়া। সে যাতে অস্ত্র নামাতে না পারে, আমাদের স্বাধীনতাকামীরা তাকে আটকায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৬ মার্চ তারিখ প্রথম প্রহরেই জাতির পিতার স্বাধীনতার ঘোষণা ইপিআরএর ওয়্যারলেস যোগে সারাদেশে প্রচার করা হয়।
পরে চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করায় একজন সেনা কর্মকর্তা প্রয়োজন পড়ায় জিয়াউর রহমানকে নিয়ে যাওয়া হয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন। যদিও মেজর রফিককে প্রথম অনুরোধ করা হয়েছিল তিনি অ্যামবুশ করে বসে থাকায় জিয়াকে দিয়েই ঘোষণা পত্র পাঠ করানো হয়। যা দিনভর সারাদেশে দলের নেতা-কর্মীরাই প্রচার করেছে।
শেখ হাসিনা প্রশ্ন তোলেন, ‘সে (জিয়াউর রহমান) তো আগাগোড়া পাকিস্তানের দালালি করে আসছে। তার জন্মও সেখানে। লেখাপড়াও ওখানে। সে কবে বাংলাদেশের হলো? তিনি আরো বলেন, চাকরি সূত্রে বাংলাদেশে এসেছে। সে সূত্রে বিবাহ করে পরবর্তীতে থেকে যায়। এটাই তো বাস্তবতা। তারপরও যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে তাদেরকে সম্মান দেয়া হয়েছে। কিন্তু, এদের চরিত্র তো বদলায়নি। ঠিকই বেঈমানি-মুনাফেকি করেছে।
‘সে-ই এই হত্যাকাণ্ডের (১৫ আগস্ট) মূলহোতা ছিল এবং ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিল। যারা ১৫ আগস্টের হত্যার সঙ্গে জড়িত, ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা করে, দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের হাতে অস্ত্র তুলে দেয়, এ দেশকে সম্পূর্ণ ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়, তাদের তৈরি করা রাজনৈতিক দল থেকে বাংলাদেশের মানুষ কী আশা করবে?’ বলেন তিনি।
ভাষণ নিয়ে সমালোচনাকে গুরুত্ব না দিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।