টাঙ্গাইলের কালিহাতীর দেউপুরে ৭ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের পঞ্চাশোর্ধ ব্যবসায়ী ছালামের বিরুদ্ধে। ঘটনা জানাজানি হলে শিশুটিকে চিকিৎসা ও আইনগত কোন ব্যবস্থা না নিতে দিয়ে মিমাংসার নামে স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ প্রভাবশালী মহল সালিশের আয়োজন করে।
সালিশে ধর্ষকের এক লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করা হয় বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা।
এছাড়াও শিশুটি ও তার পরিবার যেন ধর্ষণের বিষয়ে কোন কথা বলতে না পারে সেজন্য সোমবার সকাল থেকেই ওই প্রভাবশালী মহল তাদের গ্রামছাড়া করে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছে একাধিক স্থানীয়। এদিকে ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হলেও প্রভাবশালী মহলের ভয়ে প্রকাশ্যে কথা বলছে না কেউ।
এলাকাবাসী জানায়, ওই গ্রামের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম (৫০) ঘটনার দিন শুক্রবার দিনমজুর বাবার সন্তান ওই শিশুটিকে ডিম দেয়ার লোভ দেখিয়ে মুরগীর ফার্মে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। তাকে ছুরি দিয়ে জবাই করার হুমকি দেয় বিষয়টি গোপন করার জন্য। এতে শিশুটি দিনভর ঘটনা চাপা রাখে। পরে রাতে পেটে ব্যাথা অনুভব করলে শিশুটি তার পরিবারকে ধর্ষণের ঘটনা জানায়।
পরেরদিন শনিবার ঘটনাটি জানাজানি হলে শিশুটিকে চিকিৎসা ও আইনগত কোন ব্যবস্থা না নিতে বাঁধা দেয় সালামের পরিবার ও প্রভাবশালী মহল। পরে রোববার রাতে বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য গ্রাম্য সালিশ বসে। সালিশে সিদ্ধান্তের পর ধর্ষণের শিকার ওই শিশুটিকে মাতবররা গ্রামছাড়া করেছে বলে স্থানীয়রা জানায়। এদিকে অভিযুক্ত আব্দুস সালামের বাড়িতে ও মুরগীর ফার্মে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেউপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন বলেন, শুনেছি আমাদের ওই ছাত্রীকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। সোমবার বাংলা পরীক্ষা ছিল, পরীক্ষায় ওই ছাত্রী অংশগ্রহণ করেনি। কোথায় গেছে আমি বলতে পারবো না।
সল্লা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনিছুর রহমান বলেন, এই বিষয় নিয়ে রোববার রাতে সালিশ হয়নি কিন্তু মিমাংসা হয়েছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ধর্ষণের কোন ঘটনাই যেহেতু ঘটেনি তাই সালিশ বা মিমাংসার কোন প্রশ্নই ওঠেনা।
সোমবার দুপুরে ধর্ষণের শিকার শিশুটির বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। মেয়েটির দুই চাচী অনেকেই জানায়, স্থানীয় প্রভাবশালী একাধিক ব্যক্তি সোমবার সকালে এসে সবাইকে শাসিয়ে বলে গেছে ‘বিষয়টি তোরা কারো কাছে বলবি না’।
ধর্ষিতার মা বলেন, ‘হুনছি এলাকার মাতবররা ম্যালা রাইতে এইডা মিটমাট করছে। ভোরবেলায় ম্যায়ার(মেয়ের) চাচার সাথে ম্যায়াকে পাঠাইয়া দিছে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাম্মৎ শাহীনা আক্তার জানান, এই ধর্ষণের ঘটনাটি আমার জানা নেই। বিষয়টি দেখছি।