তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন: ৭ নভেম্বর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করতে একটি স্বাধীন কমিশন গঠন প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটের সাগর-রুনি মিলানায়তনে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী। এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন: প্রকৃতপক্ষে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর যেটি ঘটেছিল তা হলো হত্যাকাণ্ডে। সেদিন আমাদের মুক্তিযুদ্ধেের সেক্টর কমান্ডার, উপসেক্টর কমান্ডারসহ অনেককে হত্যা করা হয়েছে। খালেদ মোশাররফকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশ টেলিভিশনের তিনজন কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে। অনেককে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি বলেন: এটা আসলে বিপ্লব নয়, সৈনিক হত্যার মিশন। সৈনিকদের রক্তের উপর ভর করে জিয়া ক্ষমতায় এসেছেন, তিনি ক্ষমতা পাকাপোক্ত করেছেন। এটি বিপ্লব সংহতি দিবস পালন করার কোনো যৌক্তিকতা আমি দেখি না।
তথ্যমন্ত্রী বলেন: আমি মনে করি, বাংলাদেশের ন্যায় ভিত্তিক সমাজ গঠনের জন্য এসব হত্যার বিচার হওয়া প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে। বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে। বিচার চলছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। ৩ নভেম্বর জেলহত্যার বিচার হয়েছে। ৭ নভেম্বর অনেককে যে হত্যা করা হয়েছে, তাদের সবার বিচার হয়নি। ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার হওয়া প্রয়োজন।
হাছান মাহমুদ বলেন: বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে কিন্তু কুশীলবদের বিচার হয়নি। তেমনই ৩ নভেম্বরের অনেকের বিচার হলেও অনেকের বিচার হয়নি। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, ৭ নভেম্বর হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য একটি কমিশন গঠন করে সত্য উদঘাটন করে যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার করা উচিৎ। ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড, ৩ নভেম্বর হত্যা এবং ৭ নভেম্বরের হত্যাকাণ্ড একই ধারাবিহকতায়।
ক্র্যাবের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধনের আগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাছান মাহমুদ বলেন: অনেকেই ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করে না, অথচ ডিএফপি থেকে রেট কার্ড নেয়। মন্ত্রী হয়ে আমি দেখেছি এমনও পত্রিকা আছে যার ঢাকায় সার্কুলেশন ১ হাজার। সারাদেশে ৫ হাজার অথচ সুবিধা নেয়ার জন্য ঘোষণা দেয় দেড়লাখ। তাদের এসব বন্ধ করে শৃঙ্খলায় আনা হবে।
তিনি বলেন: পত্রিকাগুলো আমাদের কাছে সার্কুলেশনের এক হিসাব দেয়, ট্যাক্স অফিসে আরেক হিসাব দেয়। সরকারী দুই দপ্তরের দুই হিসাব চলবে না। তাদের নজরদারি ও শৃঙ্খলায় আনা হবে।
মন্ত্রী বলেন: টেলিভিশনের বিদেশি বিজ্ঞাপন নিয়ে ঝামেলা ছিল, সেটি ঠিক করছি। এছাড়াও ক্যাবল অপারেটররা বাংলাদেশি চ্যানেলগুলোকে সিরিয়ালে দূরে রাখতো। আমরা ১-৪ এর মধ্যে বাংলাদেশ টেলিভিশনের চ্যানেলগুলো ও পরবর্তীতে বেসরকারি চ্যানেলের সিরিয়াল করিয়েছি। তাদের যেভাবে শৃঙ্খলায় আনা হয়েছে, একইভাবে পত্রিকাগুলোকেও শৃঙ্খলায় আনা হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ক্র্যাবের সভাপতি আবুল খায়ের, সাধারণ সম্পাদক দীপু সারোয়ার, সহ-সভাপতি মিজান মালিক, ক্র্যাবের ক্রীড়া সাংস্কৃতিক সম্পাদক জিএম তসলিম উদ্দিন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ।
ক্র্যাবের সভাপতি আবুল খায়ের বলেন: ক্রাইম রিপোর্টাররা অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে। সাধারণত যারা রিপোর্ট করে প্রতিটা রিপোর্ট কারো পক্ষে ও কারো বিপক্ষে যায়। যাদের বিপক্ষে যায় তারা মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের হয়রানি করে। হয়রানির মামলা এড়াতে তথ্যমন্ত্রীকে দৃষ্টিপাত করার অনুরোধ করছি।
এছাড়াও সাংবাদিকতা পেশায় অরাজকতা বন্ধে ও ৯ম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নে তথ্যমন্ত্রীকে নজরদারির অনুরোধ করেন তিনি।
বক্তব্য শেষে তথ্যমন্ত্রী দাবা খেলে ক্র্যাবের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন।