কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। না পেস, না স্পিন, না রান আউটের সুযোগ কাজে লাগানো। আয়েশে খেলে সাউথ আফ্রিকার দুই উদ্বোধনীই সংগ্রহটা দুইশর ডগায় টেনে নিয়েছিলেন। কাঙ্ক্ষিত ‘সোনার হরিণের’ দেখা মিলেছে এরপরই। অভিষিক্ত এইডেন মার্করামকে রান আউটে সাজঘরে পাঠিয়ে প্রথম সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ।
পচেফস্ট্রমে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে মুশফিক যখন দিশেহারা, তখন এক চিলতে সান্ত্বনার উপলক্ষ্য মার্করামের উইকেটটি। উল্টো অনুভূতি অবশ্য মার্করামের। মাত্র ৩ রানের জন্য অভিষেক সেঞ্চুরিটা হাতছাড়া হয়েছে ২২ বর্ষী ওপেনারের। মিরাজ-মুমিনুলের যুগলবন্দীতে রান আউট। সফরকারীদের যথেষ্ট ভোগানো ৯৭ রানের ইনিংসটি ১৩ চারে ১৫২ বলে সাজানো।
বেদনার দিনে একটি রেকর্ডও সঙ্গী হয়েছে মার্করামের। যেটা নিশ্চিতভাবেই নামের পাশে চাননি তিনি। অভিষেকে রান আউটে কাটা পড়া প্রোটিয়াদের মধ্যে সর্বোচ্চ ইনিংসটি এখন তার। আগেরটি ছিল জন হোয়াইটের, ৭৬! ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নটিংহ্যামে সেই ১৯৫১ সালে ইনিংসটি খেলেছিলেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান হোয়াইট। সেই ৬৬ বছর আগের বেদনা টপকে নতুন দুঃখী এখন মার্করাম।
মার্করাম না পারলেও সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেননি তার ১৯৬ রানের জুটিসঙ্গী ডিন এলগার। ১০১ রানে অপরাজিত থেকে চা পানের বিরতিতে গেছেন। চলতি বছরে এলগারের এটি চতুর্থ শতক, আর ক্যারিয়ারের নবম টেস্ট সেঞ্চুরি।
এর আগে নয় বছর পর সাউথ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলতে নেমে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলার কোনও কৌশলই কাজে লাগেনি। মোস্তাফিজ-শফিউলরা নির্বিষ বোলিং করে গেলেন। মুশফিককে স্পিনারের দ্বারস্থ হতে হল ষষ্ঠ ওভারেই।
তাতে কিছুটা লড়াইয়ের আমেজ ফেরানো বোলিংয়ের দেখা মিলেছিল মিরাজের সৌজন্যে। ফ্লাইট, লেংথ বলের সঙ্গে বাড়তি বাউন্স আদায় করে নিচ্ছিলেন তরুণ অফস্পিনার। প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের যা একটু পরীক্ষা নেয়ার সুযোগ মিলেছে তার কল্যাণেই।
মার্করামের উইকেট তোলার সুযোগ এসেছিল আগেই। সেটা কাজে লাগাতে পারেননি ফিল্ডার মোস্তাফিজ। তাসকিনের লেংথ বলে ড্রাইভ করে পয়েন্টে বল ভাসিয়েছিলেন মার্করাম। অপ্রস্তুত মোস্তাফিজ বলের নিচেই যেতে পারেননি সময়মত। তখন ২৮ রানে অভিষিক্ত উদ্বোধনী। পরে ৩৬ রানে তাকে রানআউটে ছেঁটে ফেলার সুযোগটাও নিতে পারেনি সফরকারীরা।
বাংলাদেশের একাদশে তিন পেসার- শফিউল, মোস্তাফিজ এবং তাসকিন। সাকিব না থাকায় দারুণ কিছুর জন্য তাদের দিকেই তাকাতে হবে অধিনায়ককে। কিন্তু উইকেটে বোলারদের জন্য তেমন কিছুই নেই। মুশফিকের টস সিদ্ধান্তও এখন প্রশ্নবিদ্ধ!