আগামী ৫ বছরে দেশের বাহিরে এবং ভেতরে ৫৫ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার রাজধানী বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দুই দিনব্যাপী বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ফোরাম ২০২০ (বিডিএফ) এর সমাপনী ও সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে বিনিয়োগ করলে কোনো লোকসান নেই। সরকার ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে। এসব অঞ্চলে বিনিয়োগের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রাখা হচ্ছে। সবার এই সুযোগ গ্রহণ করা উচিত।
এই ফোরামে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের বেশকিছু উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার শীর্ষস্থানীয়রা অংশ নিয়েছেন। সব মিলিয়ে ৩৫ থেকে ৪০টি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দেশের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরাম এবার এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের বিভিন্ন মাপকাঠিতে এগিয়ে চলেছে। এখন সপ্তম-পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের শেষ পর্যায়ে। একইসঙ্গে সরকার অষ্টম-পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সুখী সমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশ গঠনে কাজ করছে সরকার। এরই প্রেক্ষিতে এবার ফোরামে সপ্তম-পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা, অষ্টম-পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার রুপরেখা, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে সরকারের পদক্ষেপসমূহ বা বিভিন্ন আর্থসামাজিক অগ্রাধিকার খাতে সরকারের মধ্যমমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা উন্নয়ন সহযোগীদের নিকট তুলে ধরা হয়েছে।
দেশের অগ্রগতি সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার প্রাক্কলন অনুযায়ী, দারিদ্র্যের হার ২০২১ সালে ১৭ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমে ২০২৫ সালে ১২ দশমিক ১ শতাংশ হবে। অতি দারিদ্র্যের হার ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ হতে ৫ দশমিক ২৮ শতাংশে নেমে আসবে।
মোট বিনিয়োগের পরিমাণ জিডিপি’র তুলনায় ২০২০ সালের ৩২ দশমিক ৮ শতাংশ হতে বেড়ে ৩৭ দশমিক ২ শতাংশ হবে। এর মধ্যে সরকারি খাতের বিনিয়োগ ৮ দশমিক ২ থেকে ৯ শতাংশ এবং ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ ২৪ দশমিক ৫ থেকে ২৮ দশমিক ২ শতাংশ হবে। ৫ বছরে দেশের ভেতরে এবং বাহিরে মোট ১০ দশমিক ৫ মিলিয়ন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। পরিকল্পনার প্রাক্কলন অনুযায়ী জিডিপি’র প্রবৃদ্ধি ২০২০ সালে ৮ দশমিক ২৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৫ সালে ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ হবে।
আগামী ৫ বছরে মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে। ব্যবসায়, উৎপাদন ও রপ্তানিবান্ধব ট্যাক্স-রেজিম সৃষ্টি করা হবে। সরকারি বিনিয়োগে দেশীয় অর্থায়ন নিশ্চিত করার জন্য মোট রাজস্ব জিডিপি অনুপাত ১৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মনোয়ার আহমেদ এবং জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো প্রমুখ।