প্রায় একযুগ পর মঙ্গলবার আলোচিত ৫৪ ধারায় ও ১৬৭ ধারা বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে সরকারের করা আপিলের রায় দেবেন সর্বোচ্চ আদালত।
এই রায়ের মাধ্যমে কোনোরকম গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়া ৫৪ ধারায় অাটক এবং আটকাবস্থায় জিজ্ঞাসাবাদের ১৬৭ ধারা সংশোধনে দেয়া হাইকোর্টের রায়ের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
এবছর ২২ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে এ বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা পালিত না হওয়া হতাশা ব্যক্ত করেন সর্বোচ্চ আদালত। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আর্জি আদালত যেন বাস্তবতার বিবেচনায় নির্দেশনা দেন।
১৯৯৮ সালে ডিবি পুলিশ সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রুবেলকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে এবং পরে পুলিশ হেফাজতে মারা যায় রুবেল। এই ঘটনায় কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন রিট করলে ২০০৩ সালে রায় দেন হাইকোর্ট।
এতে ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রচলিত বিধান সংশোধন করতে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। সংশোধনের আগে কয়েক দফা নির্দেশনা মেনে চলার কথা বলা হয়। রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন করলে তার অনুমতি দেওয়া হয় ২০০৪ সালে।
শুনানিতে আবেদনকারী ও রাষ্ট্রপক্ষ নিজ নিজ বক্তব্য তুলে ধরেন। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, অপপ্রয়োগের ব্যাপারে আদালত যদি কোন রকম নির্দিষ্ট নির্দেশনা দেয় সেটা ঠিক আছে। কিন্তু আদালত আইন সংশোধনের জন্য ছক করে দিয়ে কোন রকম আদেশ দিতে পারেন না।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা বলেন, এই ৫৪ ধারা বা পুলিশ কাস্টডি বা রিমান্ডের বিষয়ে যে সমস্ত রেকমেন্ডেশন দিয়েছে এবং আমরা বলেছি সেই সমস্ত রেকমেন্ডেশনকে বাংলাদেশের আর্থিক এবং সামাজিক প্রেক্ষাপটের আলোকে বিচার করে দেখতে হবে।
শুনানিতে আপিল বিভাগ আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সাদা পোশাকে গ্রেফতার করা, আসামীর শরীরে কাগজের মাধ্যমে লিখে হাজির করা, ফৌজদারী কার্যবিধি সংশোধন কেন হচ্ছে না, মামলা দায়েরে ত্রুটি থাকা নিয়ে মন্তব্য করেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, গ্রেফতার করার পরে পুলিশ কি করবে? পুলিশ আসামীকে মেজিস্ট্রেটের আদালতে নিয়ে যাওয়ার আগে কি করবে? ইত্যাদি কতগুলো বিস্তারিত নির্দেশনা ছিলো। ওনারা বলছেন এই নির্দেশনাগুলো এখনও ঠিকমতো পালন করা হচ্ছে না।
তবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, বর্তমানে জঙ্গিবাদসহ নানা সমস্যার মধ্যে আসামীদের জন্য হাইকোর্টের নির্দেশনা পালন করা সম্ভব কিনা তাও দেখতে হবে।