বাস চাপায় নিহত হওয়ার প্রায় ২৬ বছর পর ক্ষতিপূরণের চেক পেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাফিয়া গাজী সোনিয়ার পরিবার।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নিহতের বাবা কামাল গাজীর হাতে মোট ক্ষতিপূরণ দশ লাখ টাকার প্রথম কিস্তি আড়াই লাখ টাকার চেক তুলে দেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
নাফিয়া গাজীর ডাক নাম ছিল সোনিয়া। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বিতর্কের পাশাপাশি খুব ভাল গল্পও লিখতেন তিনি।
১৯৯১ সালে রাজধানীর মৌচাকের কাছে বিআরটিসির একটি বাসের চাপায় নিহত হন তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাফিয়া গাজী সোনিয়া। সেই সময় রিক্সায় করে ক্যাম্পাসে যাচ্ছিলেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিলেন সোনিয়া। বিশেষ করে তিনি ভাল বিতর্ক করতেন। মেধাবী এই ছাত্রীর অকাল মৃত্যুতে শোক নেমে আসে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারে। এরপর সোনিয়া হত্যার বিচারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনও হয়। কিন্তু বিচার কিংবা ক্ষতিপূরণ কিছুই আর পায়নি সোনিয়ার পরিবার।
তার স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর ‘নাফিয়া গাজী’ আন্তঃবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
সোনিয়া পড়তেন অর্থনীতিতে, একই বর্ষে সাংবাদিকতায় পড়তেন এখন চ্যানেল আই’র বার্তা সম্পাদক মীর মাসরুর জামান রনি। একসঙ্গে বিতর্ক করেছেন, খেলাঘরের সাহিত্য আসরে অংশ লিখেছেন, সংবাদের খেলাঘরে লিখেছেন। চ্যানেল আই অনলাইনকে মীর মাসরুর জামান বলেন: খুব ভাল বিতর্ক করতো সোনিয়া। আমরা একসাথে বিতর্কে অংশ নিতাম। ওর (সোনিয়া) লেখার হাতও ছিল খুব ভাল। ভাল গল্প লিখতে পারতো।
‘ঘটনার দিন দুপুরের পর আমরা দুর্ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারি। তখনই মৌচাকে ছুটে গিয়েছিলাম। প্রতিভাবান এই ছাত্রীর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে আমরা অপার সম্ভাবনাময় একজন ব্যক্তিত্বকে হারিয়েছি।’
এ মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ হিসেবে দশ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত রায় দেন আদালত। চার কিস্তিতে মোট দশ লাখ টাকা দেয়া হবে। মঙ্গলবার দেয়া হয়েছে প্রথম কিস্তি। চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের সোনিয়ার বাবা কামাল গাজীকে অর্থের পাশাপাশি অন্যভাবেও সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেন।