আজ ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবস। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী নিয়ে গঠন করা হয়েছিলো বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী। সেই থেকে ২১ নভেম্বর দিবসটিকে সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
৮০ দশকের মাঝামাঝি থেকে ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালন করা হয়। এর আগে ২৫ মার্চ সেনা, ১০ ডিসেম্বর নৌ এবং ২৮ সেপ্টেম্বর বিমান বাহিনী পৃথক দিবস পালন করত।
১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ কালরাতে পাকিস্তানী বাহিনীর বর্বর হামলা ২৬ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষনার পর বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেয় বাঙ্গালী সেনা, ছাত্র, ও সাধারন জনতার সমন্বয়ে গড়ে ওঠে একটি সামরিক বাহিনী। ৭১ এর ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবকাঠামো গঠনের কথা উল্লেখ করে এম এ জি ওসমানীকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি নিয়োগ করেন।
এপ্রিলেই ১১টি সেক্টরে ভাগ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করা হয়। ৭১ এর জুলাই থেকে ৩টি নিয়মিত ব্রিগেড জেড ফোর্স,এস ফোর্স ও কে ফোর্স গঠন করা হয়। ১০ নন্বর সেক্টরের অধীনে বাংলাদেশ নৌ বাহিনী সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করে। ফ্রান্সে পাকিস্তান সাবমেরিন ম্যাংগ্রোতে প্রশিক্ষণরত ৮ জন বাংলাদেশী ৩১ মার্চ পালিয়ে ভারত চলে যান। পলাশীর ভাগিরথী নদীর তীরে ২৭ মে থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর ৩১৫ জন নৌ কমান্ডো প্রশিক্ষণ নেয়। ১৬০ জন নৌ কমান্ডো আগস্টের মাঝামাঝি চট্টগ্রাম, মংলা, চাঁদপুর এবং নারায়নগঞ্জে ‘অপারেশন জ্যাকপট’ অংশ নেয়। এরা ধ্বংস করে ২৬টি জাহাজ।
১৯৭১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ভারতের নাগাল্যান্ডের ধীমাপুর ঘাঁটিতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জন্ম। ১০ জন পাইলট, ৬৭ জন টেকনিশিয়ান, ১টি এলয়েড থ্রি হেলিকপ্টার, ১টি অটার ও ১টি ড্যাকোডা উড়োজাহাজ নিয়ে গঠন করা হয় বিমান বাহিনী। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বেগবান করতে ১৯৭১ সালেল ২১ নভেম্বর বাংলাদেশের সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী এবং ভারতীয় মিত্র বাহিনী সম্মিলিত ভাবে পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমন শুরু করে। সেদিন স্থল নৌ ও আকাশ পথে ত্রিমুখী আক্রমনে উন্মুক্ত হয় বিজয়ের পথ। পাকিস্তানী বাহিনী বাধ্য হয় পশ্চাদাপসরনে। ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় বাংলাদেশের চুড়ান্ত বিজয়।