‘ইঁদুর’ নামের প্রাণীটি মানুষের সঙ্গে ১৫ হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে বসবাস করছে বলে আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। ফসিল গবেষণা করে সম্প্রতি পাওয়া তথ্য থেকে বিষয়টি তারা নিশ্চিত হয়েছে।
আগে এ সময়টা আরও কম বলে মনে করা হতো। কিন্তু নতুন গবেষণা সেই ধারণা ভুল প্রমাণ করেছে। শুধু তাই নয়, সেই সময়টা নাকি কৃষির উদ্ভবেরও আগে!
বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, বুনো ইঁদুর লেভান্ট (পূর্ব ভূমধ্যসাগর) অঞ্চলে বন থেকে মানুষের সংগৃহীত এবং জমাকৃত শস্য ও বীজ চুরি করার জন্য আদিম যুগের মানুষের আবাসস্থলে আনাগোনা শুরু করে।
ইঁদুরের সেই বুনো প্রজাতিই মানুষের আশপাশে লুকিয়ে থাকতে থাকতে বিবর্তিত হতে থাকে, যেটি এখন আমাদের ঘরে আশ্রয় নেয়, কোণে লুকিয়ে থাকে, ফ্রি খাবারও খায় চুরি করে!
প্রধান গবেষক প্যারিসের মিউজিয়াম ন্যাশনাল ডি’হিস্টোয়্যার ন্যাচারেলে’র ড. টমাস কুচি বলেন, ‘এই সম্পর্কের গুণে এখন ঘরের ইঁদুর অনেকটা মানুষের মতোই বিশ্বের প্রায় প্রতিটি কোণে আবাস গেঁড়েছে এবং পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি দখলদার স্তন্যপায়ী প্রজাতিতে পরিণত হয়েছে।’
ড. কুচির গবেষণাটি দক্ষিণ লেভান্ট অঞ্চলে পাওয়া ইঁদুর প্রজাতির প্রাণীদের দাঁতের অবশেষের ভিত্তিতে করা। সেই গবেষণায় পাওয়া তথ্য থেকে তিনি জানান, মানবজাতি ১৫ হাজার বছর আগে এক জায়গায় স্থির হয়ে ঘর তৈরি শুরু করে। তখন তারা পাথর ও মাটি দিয়ে তৈরি গোলাকার ঘরে বসবাস করত এবং খাওয়ার জন্য গম ও বার্লির মতো শস্য এনে জমা করে রাখত। এছাড়াও তারা হরিণ ও বুনো শূকর শিকার করে এনে রাখত।
এমন পরিবেশ ইঁদুরের মতো প্রাণীদের জন্য অনুকূল। যথেষ্ট পরিমাণ খাবার, স্যাঁতস্যাতে বদ্ধ পরিবেশ আর শত্রুর কাছ থেকে লুকোনোর জায়গা, আর কী চাই?
এই গবেষণার সময় কুকুর জাতীয় একটি পোষা প্রাণীর জীবাশ্মও পাওয়া গেছে, যাকে মৃত্যুর পর কবর দেয়া হয়েছিল।