চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

১৫ কেজি মাতৃদুগ্ধ ফেলে দিতে বাধ্য করলো বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ

আট মাস বয়সী ছেলের জন্য জমিয়ে রাখা ৫শ’ আউন্স বা ১৪.৮ কেজি পরিমাণ বুকের দুধ মাকে ফেলে দিতে বাধ্য করেছে বিমানবন্দর নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ। লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে শনিবার এ ঘটনা ঘটে।

জেসিকা কোকলি মার্টিনেজ নামের ওই মা ছেলেকে ছাড়াই প্লেনে সফর করছিলেন। ফেসবুকে এ ঘটনায় প্রচণ্ড অপমানিত হয়ে এ নিয়ে একটি খোলা চিঠি লেখেন তিনি। চিঠিতে তিনি বলেন, ‘তোমরা আমার ছেলের প্রায় দু’সপ্তাহের খাবার ফেলে দিতে আমাকে বাধ্য করেছো।’

হিথ্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, যুক্তরাজ্য সরকারের নীতিমালা মেনেই কাজটি তাদের করতে হয়েছে। ওই নীতিমালা তাদের ওয়েবসাইটেও দেয়া আছে যাত্রীদের জানার সুবিধার্থে।

নীতি অনুসারে, তরল বস্তু শুধু ১শ’ বা তার কম ধারণক্ষমতার স্বচ্ছ এবং বার বার সিল করা যায় এমন কন্টেইনারে করে প্লেনে বহন করা যাবে। একমাত্র তরল শিশুখাদ্য হলে এর বেশিও বহন করা যাবে, যদি যাত্রী সঙ্গে শিশু নিয়ে সফর করে। সেক্ষেত্রে ওই খাবার হোল্ড লাগেজ হিসেবে সঙ্গে রাখতে হবে।

খোলা চিঠিতে জেসিকা ভুল স্বীকার করে বলেন, তার আগেই নীতিমালার ওপর চোখ বুলিয়ে নেয়া উচিৎ ছিলো। কিন্তু বাচ্চা সাথে না থাকলে একজন মা উড়োজাহাজে মাতৃদুগ্ধ নিয়েও সফর করতে পারবে না, এমন আইনকে তিনি ‘আমার মতো কর্মজীবী মায়েদের জন্য ভীষণভাবে অন্যায় এবং অবিবেচনামূলক’ বলে উল্লেখ করেন।

‘এখন ছেলেকে সারাক্ষণ নিজে দুধ খাওয়ানো ছাড়া আমার আর কোনো উপায় নেই। কেননা সর্বোচ্চ চেষ্টার পরও আমার কাছে এখন সেই পরিমাণ দুধ মজুদ নেই যা আমি কাজে থাকা অবস্থায় তাকে খাওয়ানো সম্ভব,’ বলেন জেসিকা, ‘কর্মজীবী মা হিসেবে কাজের পাশাপাশি সন্তানের সব প্রয়োজন পূরণ সবচেয়ে কঠিন কাজের একটি। আর সেই কঠিন কাজটিকে এক বিকেলের মধ্যেই তোমরা প্রায় অসম্ভব একটি কাজে পরিণত করেছো।’

জেসিকা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘নিরাপত্তা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু এটাই তোমাদের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিৎ নয়… তোমরা শুধু আমার সন্তানের মুখ থেকে খাবার কেড়ে নাওনি, আমাকে অপমান করেছো এবং একইসঙ্গে আমাকে একজন হেরে যাওয়া পেশাজীবী ও মা অনুভব করিয়েছো।’

২০০৬ সালে সাতটি আন্তঃআটলান্টিক প্লেনে তরল বিস্ফোরক দিয়ে সন্ত্রাসী হামলার একটি পরিকল্পনা ফাঁস হয়। এর পরই লন্ডনে উড়োজাহাজে করে তরল পরিবহনে কঠোর আইন প্রথম জারি হয়।