‘১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে জিয়া এবং ২১ আগস্টে তার স্ত্রী-পুত্র বাংলাদেশ ও আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশুন্য করতে চেয়েছিলো। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সাথে খালেদা জিয়া এবং তার কুলাঙ্গার পুত্র তারেক রহমান জড়িত ছিলো এতে কোন সন্দেহ নেই। ২০১৩, ২০১৫ সালে তারা হরতাল-অবরোধের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে উচ্ছেদ করে তারা তালেবান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলো’।
বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের অস্থায়ী বেদীতে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আয়োজিত শোকসভায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন,‘আমার নিজের মিটিংয়ে গ্রেনেড হামলা নাকি আমি চালিয়েছি। এধরনের মিথ্যা প্রচারণা বিএনপির পক্ষ থেকে চালানো হয়েছে। বিএনপির অনেক সংসদ সদস্য বলেছেন আমার পিতার পথেই নাকি আমাকে বিদায় নিতে হবে। খালেদা জিয়া বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রীতো দূরে, আমি নাকি কখনো সংসদে বিরোধী দলও হতে পারবো না। এধরনের ভবিষ্যতবাণী খালেদা জিয়া কিভাবে করেন। গ্রেনেড হামলার পর হামলায় জড়িত অনেককে বিদেশে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছে তখনকার সরকার। তখনকার সময়ে বিএনপির প্রতিটি কর্মকাণ্ডে এটাই স্পষ্ট হয়ে উঠে আমাকে হত্যা এবং আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা ছিলো বিএনপির।
এমনকি গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আইভি রহমানের পাশে থাকতে দেয়া হয়নি তার ছেলে মেয়েকে। আইভির ছেলেমেয়েকে একটি রুমে তালাবদ্ধ রেখে খালেদা জিয়া আইভি রহমানকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। এ বিষয়টি অত্যন্ত রহস্যজনক। কেন এমন একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি করলেন তিনি।
১৫ আগস্ট বঙ্গবনন্ধুকে হত্যার সাথে জিয়াউর রহমান জড়িত ছিলো। খুনী রশিদ ফারুক বিবিসির সাথে ইন্টারভিউয়ে সেই কথা স্বীকার করেছিলো।
আসলে জিয়ার প্রতিষ্ঠিত বিএনপি কখনোই দেশের মানুষের কল্যাণে বিশ্বাস করেনি। যখনই মানুষ শান্তিতে থাকে তখনই তারা সন্ত্রাসের মাধ্যমে ফায়দা লুটতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে বিশ্বাস করে।অথচ তারা ক্ষমতায় থেকে শুধু নিজেদের ভাগ্যের উন্নয়নে ব্যস্ত ছিলো। তাই জিয়ার ভাঙ্গা সুটকেসের পরিবারটির এতো সম্পদ কিভাবে হয় বলে প্রশ্ন রাখেন তিনি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন,‘বাংলাদেশ বিশ্বে আজ উন্নয়নের রোল মডেল। সেদিনের হামলায় যদি মারা যেতাম তাহলে বাংলাদেশের ভাগ্য উন্নয়ন হতো কিনা তাতে সন্দেহ ছিলো। কারণ আমি কাজ করি দেশ এবং জনগণের জন্য,তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। বঙ্গবন্ধুও আমৃত্যু তা-ই চেয়েছেন।’
২১ আগস্টের ভয়াল স্মৃতির কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, হামলায় হানিফ ভাইসহ নেতাকর্মীরা মানবঢাল রচনা করে আমাকে রক্ষা করেছিলেন।সেসময় বিএনপি সরকার উদ্ধার কাজ না করে উল্টো এই সব হতাহত মানুষকে লাঠিচার্জ করেছিলো, টিয়ার শেল ছুড়েছিলো। আসলে তারা আক্রমণকারীদের নিরাপদে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছিলো। এমনকি মামলার আলামত নষ্ট,জজ মিয়া নাটক করেছিলো।’
এখন এই হামলার বিচার হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু হত্যা, যদ্ধাপরাধীদের মতো ২১ আগস্ট হামলারও বিচার করে দেশকে কলঙ্কমুক্ত করা হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাহারা খাতুন, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দীলিপ বড়ুয়া, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ এ আলোচনাসভায় উপস্থিত ছিলেন।