বাংলা কথা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক ও প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদ। ইমপ্রেস টেলিফিল্ম ও চ্যানেল আইয়ের সঙ্গে তার বন্ধন ছিল দৃঢ়। প্রতি বছর চ্যানেল আইয়ের পক্ষ থেকে অত্যন্ত আড়ম্বরভাবে পালন করা হয় তার জন্মদিন। আসছে ১৩ নভেম্বর নির্মাণের এই কারিগরের জন্মদিন উপলক্ষ্যেও হচ্ছে না তার ব্যতিক্রম।
এ বছর হুমায়ূন মেলার পৃষ্ঠপোষকতা করছে এসিআই পিওর সল্ট। পাওয়ার্ড বাই এনআরবি বাজার। এবারের হুমায়ূন মেলা কেমন হবে তার ধারনা দিতেই শনিবার দুপুরে চ্যানেল আই প্রাঙ্গনে আয়োজন করা হয় একটি সংবাদ সম্মেলনের। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে সেখানে কথা বলেন ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড ও চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর। এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন এসিআই পিওর সল্ট-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আলমগীর, সংগীত শিল্পী সেলিম চৌধুরী, অভিনেতা মাজনুন মিজান, আনন্দ আলো সম্পাদক রেজানুর রহমানসহ অনেকে।
‘হুমায়ূন মেলা ২০১৭’-এর এবারের আয়োজনটিতে নতুন কিছু যুক্ত হতে যাচ্ছে জানিয়ে চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর বলেন, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে সম্পর্ক বাংলাদেশের সব মানুষের হৃদয়ের। চ্যানেল আইয়ের সঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের সম্পর্ক বহু আগে থেকেই। তিনি চ্যানেল আইয়ের সব অনুষ্ঠান দেখতেন, মতামত জানাতেন, পরামর্শ দিতেন। তার পঞ্চাশতম জন্মদিনের আয়োজন করেছিল ইমপ্রেস টেলিফিল্ম। এরপর প্রতি বছর ইমপ্রেস ও চ্যানেল আই এই গুনী মানুষটির জন্মদিন উদযাপন করে আসছে। কয়েক বছর ধরে যুক্ত হয়েছে হুমায়ূন মেলা। চ্যানেল আই ভবনের সামনে চেতনা চত্বরে দিনভর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন চলবে। যেখানে মিলিত হবেন সারা দেশের অসংখ্য হুমায়ূন ভক্ত। এবারের মেলায় অনেক কিছু নতুনভাবে আমরা যোগ করার চেষ্টা করেছি। সেগুলো হয়তো সারা পৃথিবীতে চ্যানেল আইয়ের পর্দায় মানুষ দেখবেন।
এরপর কথা বলেন হুমায়ূন মেলার প্রধান পৃষ্টপোষক এসিআই পিওর সল্ট-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আলমগীর। হুমায়ূন মেলার মত চ্যানেল আইয়ের এমন আয়োজনের সাথে সব সময় পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, আমার মনে হয় বাংলা সাহিত্যের সৃষ্টির পর থেকে হুমায়ূনের মতো এতো জনপ্রিয় কোনো সাহিত্যিক সৃষ্টি হয়নি। তার বই, নির্মাণ সব মিলিয়ে তিনি বাংলার মানুষের হৃদয়ে তিনি অনেকদিন বেঁচে থাকবেন। আমি আশা করছি, হুমায়ূন মেলা-২০১৭ খুব ভালোভাবে উদযাপিত হবে। অনেক ভক্তরা এই মেলায় আসবেন। গতবার ও তার আগেরবারও এই মেলায় আমরা সম্পৃক্ত ছিলাম, এবং আগামিতেও আমরা এমন অনুষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত থাকবো।
হুমায়ূন আহমেদের নাটক ও সিনেমায় শোনা যেতো দরদী একটি কণ্ঠ, যার বেশীর ভাগ কণ্ঠ ছিল সেলিম চৌধুরীর। সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন তিনিও। চ্যানেল আইয়ের প্রতিটি হুমায়ূন মেলায় তিনি অংশ গ্রহন করেছেন জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই সংগীতশিল্পী বলেন, চ্যানেল আই আয়োজিত আমি সবগুলো ‘হুমায়ূন মেলা’য় অংশ গ্রহন করেছি। আমি মনে করি আমরা যারা শিল্পী, স্যারের সঙ্গে কাজ করেছি তাদের প্রত্যেকের উচিত ‘হুমায়ূন মেলা’য় অংশ্র গ্রহণ করা। এমন আয়োজনের জন্য চ্যানেল আইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। আমরা যারা হুমায়ূন স্যারের সঙ্গে ছিলাম তাদের চাওয়া, স্যারকে নিয়ে যেনো এমন আয়োজন অব্যাহত থাকে।
এরপর সংবাদ সম্মেলনে হুমায়ূন আহমেদের নামে নাট্য পুরস্কার চালু করারও প্রস্তাব করেন ‘আনন্দ আলো’র সম্পাদক রেজানুর রহমান। তিনি এসিআই পিওর সল্ট-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের অস্বীকার করার সুযোগ নেই যে, আজকে বাংলাদেশ টেলিভিশন নাটকে যে অগ্রগতি হয়েছে তা কিন্তু হুমায়ূন আহমেদের হাত ধরেই হয়েছে। বর্তমানে অসংখ্য চ্যানেল, অসংখ্য তরুণ নির্মাতা। যারা হুমায়ূন আহমেদের থেকে অনেক কিছু নিয়েছে। এখন তাদেরকে যদি আপনার প্রতিষ্ঠান থেকে এসিআই হুমায়ূন আহমেদ স্মরণে ‘আনন্দ পুরস্কার’ ঘোষণা করতে পারেন কিনা? পাঁচটি বা দশটি শাখায় এমন পুরস্কার যদি দেয়া যায় তাহলে যেমন তরুণদের উৎসাহিত করা হবে। তেমনি সাহিত্য ক্ষেত্রে যেমন হুমায়ূন আহমেদের নামে পুরস্কার আছে, তেমনি শোবিজেও তার নামে একটি পুরস্কার থাকলো।
রেজানুর রহমানের এমন বক্তব্যে এসিআই পিওর সল্ট-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, এটা অত্যন্ত ভালো প্রস্তাব। আমি মনে করি হুমায়ূন আহমেদের নামে নাটকের জগতে এই পুরস্কার ঘোষণা আমি করতে পারবো। আমি এটা নিয়ে ফরিদুর রেজা সাগরের সঙ্গে কথা বলবো, যদি তিনি আমাকে এটা করার সুযোগ দেন এবং সবাই মিলে আমাকে গাইড দিলে এটা আশা করি করতে পারব।
হুমায়ূন মেলা নিয়ে চ্যানেল আই ভবনে সংবাদ সম্মেলন:
ছবি: জাকির সবুজ