দুই শীর্ষ নেতাসহ আল কায়েদার বাংলাদেশ শাখার ১২ জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
আল কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ (এ কিউ আই এস) শাখার বাংলাদেশ ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক মাওলানা মাইনুল ইসলাম ও উপদেষ্টা মাওলানা জাফর আমিনসহ র্যাবের হাতে আটক হওয়া ১২ জঙ্গি ঈদের পরে সারাদেশে নাশকতার পরিকল্পনা করেছিলো বলে স্বীকার করেছে।
বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখতে ঢাকার দারুস সালাম থানার এসআই মো. জালালউদ্দিন ১২ আসামিকে শুক্রবার মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে মহানগর হাকিম মোল্লা সাইফুল ইসলাম তিন দিনের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
নাশকতার পরিকল্পনা ছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে তিনজন লেখক-ব্লগার হত্যার সাথে তাদের সম্পৃক্ততা এবং ভবিষ্যত কোনো পরিকল্পনা ছিলো কিনা রিমান্ডে তা খতিয়ে দেখবে পুলিশ। এছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হুজির শীর্ষ নেতা মওলানা মুফতি মঈনুদ্দীন ওরফে আবু জান্দাল ওরফে মাসুম বিল্লাহকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ড্রেনের রড কেটে মুক্ত করতে তদের যে পরিকল্পনা ছিলো তার সাথে কারা কারা জড়িত তাও বের করার চেষ্টা করা হবে।
বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১২ জঙ্গিসহ উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক তৈরির উপকরণ, বিভিন্ন ধরনের ধারালো অস্ত্র এবং উগ্র মতবাদসম্বলিত বিভিন্ন ধরনের বই।
আটকের পরে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, আটক ১২ জঙ্গি এক সময় নিষিদ্ধ সংগঠন হুজিতে সক্রিয় ছিলো। কয়েক দফায় আটক হওয়া জঙ্গিরা রাজধানীর মিরপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলো।
র্যাব আরও জানায়, মিরপুরের ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য ও জিহাদী বইসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়।
আটক জঙ্গিরা বগুড়ায় একটি মাদ্রসায় প্রশিক্ষণের জন্য ২০ জনের একটি দল নিয়ে ঘাঁটি স্থাপন করেছিলো। দলটি ৩১৩ বদরের সৈনিক দল নামে পরিচিত। তারা আধুনিক পদ্ধতিতে বোমা তৈরি এবং শারীরিক প্রশিক্ষণও নিতো।
আটক ১২ জনের মধ্যে মাওলানা মাইনুল ইসলাম (৩৫) একিউআইএস-এর বাংলাদেশ শাখার প্রধান সমন্বয়ক। আর আটক মুফতি জাফর আমিন (৩৪) একিউআইএসের একজন উপদেষ্টা। বাকিরা হলো- একিউআইএস বাংলাদেশ শাখার সদস্য মো. সাইদুল ইসলাম (২০), মো. মোশাররফ হোসেন (১৯), আব্দুর রহমান বেপারী (২৫), আলামিন (২৮), মো. মুজাহিদুল আসলাম (৩১), আশরাফুল ইসলাম (২০), রবিউল ইসলাম (২৮) ও মো. জাবিবুল্লাহ (২৬) , মো. শহীদুল ইসলাম (২৯) এবং আলতাফ হোসেন ওরফে আল মামুন (২৬)।
আটক জঙ্গিদের ঢাকার দারুস সালাম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী ও বিস্ফোরক আইনে মামলা করা হয়েছে। শুক্রবার রিমান্ড আবেদনের শুনানির সময় আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।