বাংলা ভাষা ও বাংলা সন-তারিখকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক কাজে ব্যবহার, সর্বস্তরে প্রচলন এবং ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি সংরক্ষণসহ ১১ দফা প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের দাবিতে ‘প্রতীকী পদযাত্রা’ করেছেন বায়ান্নর ভাষা সংগ্রামীরা।
মঙ্গলবার বিকেলে ভাষা আন্দোলন স্মৃতিরক্ষা পরিষদের ব্যানারে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে অবস্থিত ঐতিহাসিক আমতলা থেকে শহীদ মিনার এর সামনের রাস্তা পর্যন্ত এই পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন ভাষা সংগ্রামী মুস্তাফিজুর রহমান, ভাষা সংগ্রামী আব্দুল করিম পাঠান, ভাষা সংগ্রামী রেজাউল করিম এবং ভাষা সংগ্রামী ফুলে হোসেন।
ভাষা আন্দোলন স্মৃতিরক্ষা পরিষদের ১১ দফা প্রস্তাবনাগুলো হলো- জাতিসংঘের দাপ্তরিক কাজে বাংলা ব্যবহারে জোরালো উদ্যোগ গ্রহণ, সর্বস্তরে বাংলা সন ও তারিখ ব্যবহার বাধ্যতামূলক, ২১ ফেব্রুয়ারি ৮ ফাল্গুন ঠিক রাখা, ভাষা শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও বীরত্বগাঁথা পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত, বিদেশীদের বাংলা শেখার কারিকুলাম, প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা ব্যবহারে বাংলা সফটওয়ার, ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত ১৪৪ ধারা ভাঙার গেট থেকে শহীদ মিনার হয়ে আজিমপুর কবর স্থান পর্যন্ত সড়কটিকে শহীদ সরণী নামকরণ এবং শহীদদের নামে সড়ক ও তোরণের নামকরণের দাবি জানান তারা।
পদযাত্রার আগে ভাষা সংগ্রামীরা বায়ান্নর স্মৃতিচারণ ও এ অর্জনে জাতির কাছে তাদের প্রত্যাশা নিয়ে আলোচনা করেন।
ভাষা সংগ্রামী ফুলে হোসেন ৫২’র ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ ছিলো সংখ্যাগরিষ্ঠ। সেই ভাষাকে অবদমিত করে তারা (পাকিস্তানিরা) উর্দুকে চাপিয়ে দিয়েছিলো। ওরা আমার ভাষাকে কেড়ে নিতে চেয়েছিলো।”
এ প্রজন্মের কাছে বাংলাকে হাতিয়ার করে এগিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, “এ প্রজন্মের যারা তাদের কাছে আমার অনুরোধ, আমরা যা কিছু করেছি, তা যেন ভুলে না যান। এই বাংলাকে হাতিয়ার করে আপনারা এগিয়ে যান। এগিয়ে যাওয়ার নামই জীবন।”
ভাষাসংগ্রামী আব্দুল মতিনের সহধর্মিণী মনিকা মতিন বলেন, “ছোটবেলায় ২১ ফেব্রুয়ারিকে আমরা পালন করেছি শহীদ দিবস হিসেবে, এখন পালন করছি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। এজন্য আমরা গর্বিত”
তিনি বলেন, “বাংলাভাষা সর্বত্র চালু করা হোক। আজকাল বাংলার সাথে ইংরেজি মিশিয়ে অনেকে কথা বলেন। এই ‘বাংলিশ’ বলার রীতি বন্ধ করা হোক।”