ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে চমকে দিলেন দেশের বরেণ্য সুরকার-গীতিকার ও সংগীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। জানালেন, তার হার্টে ৮টি ব্লক ধরা পড়েছে! বাইপাস সার্জারি করানো ছাড়া চিকিৎসা সম্ভব না। তার এমন কথায় যেনো আকাশ থেকে পড়ার অবস্থা তার ভক্ত, অনুরাগী, শুভাকাঙ্ক্ষিসহ দেশের সংগীতাঙ্গনের সকলের। এমন অসুস্থতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন অথচ তা জানেন না তার নিকট জনরাও। এরইমধ্যে হাসপাতালে সিসিইউতে চারদিন ভর্তিও ছিলেন এই সংগীতজ্ঞ।
হার্টে ব্লক ধরা পড়েছে এবং আগামি দশ দিনের মধ্যে হার্টের বাইপাস সার্জারি করার জন্য প্রস্তুত আছেন জানিয়ে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল জানান: আমার হার্টে ৮ টা ব্লক ধরা পড়েছে, এবং বাইপাস সার্জারি ছাড়া চিকিৎসা সম্ভব না। এরই মাঝে কাউকে না জানিয়ে আমি ইব্রাহিম কার্ডিয়াকে-এ CCU তে চারদিন ভর্তি ছিলাম। আগামী ১০ দিনের মধ্যে আমি আমার হার্টের বাইপাস সার্জারি করাতে প্রস্তুত রয়েছি।
তবে এরজন্য কারো সহায়তা লাগবে না বলেও জানান শতাধিক চলচ্চিত্রের এই সংগীত পরিচালক। জানান: কোনো সরকারি সাহায্য বা শিল্পী, বন্ধু বান্ধব সাহায্য আমার দরকার নাই। আমি একাই যথেষ্ট। শুধু অপারেশন-এর পূর্বে ১০ সেকেন্ড এর জন্য বুকের মাঝে বাংলাদেশের পতাকা এবং কোরান শরিফ রাখতে চাই। আর, তোমরা আমার জন্যে শুধু দোয়া করবে। কোনো ভয় নাই।
এদিকে নিরাপত্তা জনিত কারণে গত ৬ বছর ধরে রীতিমত গৃহবন্দি আছেন জানিয়ে এর কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন: সরকারের নির্দেশেই ২০১২ সালে আমাকে যুদ্ধ অপরাধীর ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় সাক্ষী হিসাবে দাঁড়াতে হয়েছিল। সাহসিকতার সাথে সাক্ষ্যপ্রমাণ দিতে হয়েছিল ১৯৭১-এ ঘটে যাওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলখানার গণহত্যার সম্পূর্ণ ইতিহাস। আর, ওই গণহত্যা থেকে বেঁচে যাওয়া ৫ জনের মধ্যে আমিও একজন। হত্যা করা হয়েছিল একসাথে ৪৯ জন মুক্তিযোদ্ধাকে। কিন্তু, এই সাক্ষীর কারণে আমার নিরপরাধ ছোটো ভাই ‘মিরাজ’ হত্যা হয়ে যাবে এ আমি কখনওই বিশ্বাস করতে পারিনি। সরকারের কাছে বিচার চেয়েছি, বিচার পাইনি। আমি এখন ২৪ ঘন্টা পুলিশ পাহারায় গৃহবন্দী থাকি, একমাত্র সন্তানকে নিয়ে। এ এক অভূতপূর্ব করুণ অধ্যায়। একটি ঘরে ৬ বছর গৃহবন্দি থাকতে থাকতে আমি আজ উল্লেখযোগ্য ভাবে অসুস্থ।
সব কটা জানালা খুলে দাও না,আমার সারাদেহ খেয়ো গো মাটি, আমার সারাদেহ খেয়ো গো মাটি,আম্মাজান আম্মাজান-এরকম অসংখ্য জনপ্রিয় গানের সুরারোপ করা এই সংগীতজ্ঞ মানুষটিকে নিয়ে ইতিমধ্যে সংগীত অঙ্গনে শুরু হয়েছে আলোচনা। ছোট বড় সকলে চাইছেন, আগামি দশ দিনের মধ্যে হার্টে বাইপাস সার্জারি করে যেনো দ্রুতই তিনি সুস্থ হয়ে সবার মাঝে ফিরে আসতে পারেন।
আহমেদ ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুলের এমন সংবাদে ফেসবুক স্ট্যাটাসটির নিচে মন্তব্য করেন বেশ কয়েকজন নামিদামি শিল্পী, সুরকার, গীতিকার। এরমধ্যে শিল্পী মোস্তফা জামান আব্বাসি লিখেন: বন্ধু, তোমার জন্য দোয়া রইলো। পুরো দেশ তোমার সঙ্গে আছে।
আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের সুস্থতা কামনা করে সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ লিখেন: আপনার দ্রুত সুস্থতা কামনা করি। সব ঠিক হয়ে যাবে বুলবুল ভাই। অনেক দোয়া ও
শুভকামনা রইল ।
কণ্ঠশিল্পী ও সংগীত পরিচালক এস আই টুটুল লিখেন: অনেক অনেক দোয়া। হে দয়াময়, তুমি সব পারো! সবই পারো! তুমি চাইলেই ভাল করে দিতে পারো, ভাল করে দিও গো মালিক। আমিন
সুরকার, গীতিকার ও সংগীত পরিচালক শওকত আলী ইমন বলেন: আমরা আছি পাশে বুলবুল ভাই। কেউ থাকুক বা নাই থাকুক। আপনার দীর্ঘায়ু কামনা করি।