অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপির দায়ের করা নারী নির্যাতন মামলা থেকে জাতীয় দলের ক্রিকেটার রুবেল হোসেনকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর বিচারক তানজিনা ইসলাম তার আদেশে হ্যাপির দায়ের করা ‘না-রাজি’ আবেদনটি খারিজ করে দিয়ে পুলিশের দেয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি গ্রহণের সিদ্ধান্ত জানান।
চূড়ান্ত শুনানির দিন সকাল ১০টায় ক্রিকেটার রুবেল হোসেন তার আইনজীবীদের সঙ্গে এজলাসে প্রবেশ করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে হাসিমুখেই এজলাসে আসেন হ্যাপি। তাদের উপস্থিতিতেই ‘না-রাজি’ আবেদনের উপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
হ্যাপির আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, পুলিশ মামলার সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ না করেই রুবেলকে অব্যাহতি দিয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে।
রুবেলের আইনজীবীরা তাকে নির্দোষ দাবি কওে মামলার দায় থেকে মুক্তির আবেদন জানান।
শুনানির পর কয়েক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে দুপুর ২টায় আদালত তার আদেশে নারী নির্যাতন মামলার দায় থেকে রুবেলকে অব্যাহতি দিয়ে পুলিশের দেয়া চুড়ান্ত প্রতিবেদনটি গ্রহণ করেন।
রায় ঘোষণার আগেই অবশ্য হ্যাপি এবং রুবেল আলাদাভাবে আদালত থেকে চলে যান।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় হ্যাপির আইনজীবী তুহিন হাওলাদার জানিয়েছেন, আদালত সঠিক রায় দেননি। এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগ
২০১৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর মিরপুর থানায় নারী নির্যাতনের অভিযোগ এনে জাতীয় দলের ক্রিকেটার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নাজনীন আক্তার হ্যাপি।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, প্রেমের সম্পর্ক চলার সময় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন রুবেল।
ওইসময় গ্রেফতার হয়ে কয়েকদিন কারাবাস করে জামিনে মুক্তি পেয়ে বিশ্বকাপ খেলতে যান রুবেল হোসেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার অসাধারণ পারফরম্যান্সেই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে বাংলাদেশ।
অব্যাহতি বৃত্তান্ত
এর মধ্যে অবশ্য পুলিশ তার তদন্ত অব্যাহত রাখে। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বিশ্বকাপ ফাইনালের দিনই গত ২৯ মার্চ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন রুবেল হোসেনকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
গত ১৩ এপ্রিল ঢাকা মহানগর হাকিম আতাউল হক চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি গ্রহণ করে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠিয়ে দেন। ১৯ এপ্রিল ঢাকা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এ মামলাটি বদলি করা হয়।
কিন্তু ১৭ মে হ্যাপির আইনজীবীরা পুলিশ প্রতিবেদনের উপর ‘না-রাজি’র আবেদন জানালে ২০ মে তা শুনানির দিন ঠিক করেন আদালত। ওইদিন ক্রিকেটার রুবেলের জামিন বহাল রাখার নির্দেশও দেন বিচারক।
জামিনে থাকা রুবেল অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আনন্দ নিয়েই জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দিতে যান।