সোমবার সকাল ১১টায় মিয়ানমার দূতাবাস ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এছাড়া ওইদিন জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবর স্বারকলিপিও প্রদান করবে তারা।
শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরী শাখা আয়োজিত রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে এমন ঘোষণা দেন দলের মহানগর শাখার আমির নুর হোসেন কাসেমী।
গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সরকার ও জনগণকে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে নুর হোসেন কাসেমী বলেন: ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আরকানের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহায্য করুন। এই যুদ্ধে দেশের সর্বস্তরের জনগণকে আপনি পাশে পাবেন।’
হেফাজতের ঢাকা মহানগর শাখার নেতা মাওনালা নাসিরুদ্দিন খান বলেন: ‘রোহিঙ্গারা আমাদের মুহাজির। মিয়ানমারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত মেহমান হিসেবে আমরা তাদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব পালন করতে চাই।’
এসময় হেফাযতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব আহমদ আলী কাসেমী বলেন, জাতিসংঘ মিয়ানমারকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই বাংলাদেশকে এই বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
উলামা-মাশায়েখ, ইসলামি আন্দোলন, ইসলামি যুব সংঘসহ বেশকিছু ইসলামি দল সমাবেশে অংশ নেয়। সমাবেশ শেষে তারা বায়তুল মোকাররম এলাকায় মিছিল করে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর বহুদিন ধরে চলমান সংঘর্ষ-সহিংসতা সঙ্কট সমাধানে ২০১৬ সালের আগস্টে গঠিত হয় অ্যাডভাইজরি কমিশন অন রাখাইন স্টেট। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে ওই কমিশন এক বছরের তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের প্রধান অং সান সু চির কাছে জমা দেয় চলতি বছরের ২৪ আগস্ট।
৬৩ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদন জমা দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই ২৪ আগস্ট দিবাগত রাতে ত্রিশটি পুলিশ ও সেনাচৌকিতে রহস্যজনক হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় নিহত হয় নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ সদস্য। তারপরই হামলার জন্য রোহিঙ্গা ‘জঙ্গি’দের দায়ী করে জবাব হিসেবে সেনাবাহিনী পুরো অঞ্চলে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে।
সেনাবাহিনীর ওই হামলায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫শ মানুষ মারা গেছে, আর প্রাণভয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে পাড়ি জমাচ্ছে বাংলাদেশে। নৌপথে পালিয়ে আসার পথে নৌকাডুবিতেও বাড়ছে মৃতের সংখ্যা।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন না করার উদ্দেশ্যেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এই হত্যাকাণ্ড শুরু করে।