সাবেক অধিনায়ক মিসবাহ-উল হককে হেড কোচ নিয়োগ দিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। একইসঙ্গে তাকে প্রধান নির্বাচকের দায়িত্বও দেয়া হয়েছে, যা দেশটির ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম যৌথ পদে নিয়োগের ঘটনা। মিসবাহ’র সঙ্গে বোলিং কোচ করা হয়েছে ওয়াকার ইউনুসকে। তবে ব্যাটিং কোচের পদ এখনো ফাঁকা রয়েছে।
পিসিবি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, মিসবাহ পাঁচ সদস্যের প্যানেল থেকে সর্বসম্মতিক্রমে কোচের পদ অর্জন করেছেন। যারা বেশ কয়েকজন প্রার্থীর সাক্ষাতকার নিয়েছিলেন এবং পিসিবি চেয়ারম্যান এহসান মানির কাছে সুপারিশ জমা দিয়েছিলেন।
এর আগে পাকিস্তানের হেড কোচ ছিলেন মিকি আর্থার, আর প্রধান নির্বাচক আরেক সাবেক অধিনায়ক ইনজামাম-উল হক। এখন এই দুটি দায়িত্বই সামলাবেন মিসবাহ। বিশ্বকাপে প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারায় আগের কোচিং স্টাফের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়ায়নি পিসিবি।
জাতীয় ক্রিকেট কমিটির সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করার পরে গত ২৬ আগস্ট আবেদনের শেষদিনে কোচ হতে দরখাস্ত জমা দিয়েছিলেন। যদিও প্রধান কোচ হওয়ার দৌড়ে ফ্রন্টরানার ছিলেন মিসবাহই। সম্প্রতি পিসিবি তাকে প্রাক-মৌসুম প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের কমান্ড্যান্ট হিসাবে নিয়োগ দিয়েছিল, যেখানে বোর্ডের বেশিরভাগ চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড় অংশ নিচ্ছেন।
২০১১ সালে পাকিস্তানের অধিনায়ক হিসাবে তিনি এক বিস্ময়কর অগ্রগতি অর্জন করেছিলেন। দলকে স্বতন্ত্র নেতৃত্ব দিয়ে প্রথমবারের মতো টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে তুলে দেশের অন্যতম সেরা অধিনায়ক হয়েছিলেন। অধিনায়কের মতো হেড কোচ ও প্রধান নির্বাচক হিসেবে একই জাদুতে কাজ করে দলকে সেরাটা দিতে পারেন কিনা এখন সেটাই দেখার।
চাকরি পাকা হওয়ার পর সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান কোচ এবং প্রধান নির্বাচক মিসবাহ বলেছেন, ‘অতীতে পাকিস্তান জাতীয় দলের প্রশিক্ষণ শিবিরের ক্যাম্প কমান্ড্যান্ট হিসাবে কাজ করাটা আমার জন্য সবচেয়ে সেরা কাজ। এখন আবার হেড কোচও। এটি একটি সম্মানের বিষয় এবং এর চেয়েও বড় কথা, আমরা যেন ক্রিকেটে বেঁচে থাকি এবং ক্রিকেটে শ্বাস নিতে পারি, তেমনি একটি বৃহৎ দায়িত্ব এটি।’
‘আমি জানি প্রত্যাশা অনেক বেশি, তবে এই কাজের জন্য একদম প্রস্তুত আছি এবং সেজন্যই দায়িত্বটা নিয়েছি। অন্যথায় পাকিস্তান ক্রিকেটের অন্যতম চ্যালেঞ্জিং ও লোভনীয় ভূমিকার জন্য প্রস্তাবটা গ্রহণ করতাম না। আমাদের বেশ কয়েকজন মেধাবী এবং উদ্দীপক ক্রিকেটার রয়েছেন, তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এমনভাবে প্রস্তুত করতে চাই যাতে তারা বুদ্ধিমত্তা, স্মার্ট এবং নির্ভীকভাবে ক্রিকেট খেলতে পারে। আমি এই বিষয়েও সচেতন যে, আমাদের ড্রেসিংরুম সংস্কৃতিতে পরিবর্তনের প্রয়োজন হবে। যদি আমাদের সর্বোচ্চ স্তরে ধারাবাহিকভাবে প্রতিযোগিতা করতে হয়, তাহলে আমাদের আধুনিক দিনের এই প্রয়োজনীয়তাগুলো গ্রহণ করতে হবে’ যোগ করেন মিসবাহ।
মিসবাহ-ওয়াকার যুগল
মিসবাহ ও ওয়াকার অতীতে একসাথে কাজ করেছিলেন যখন প্রথমজন সাবেক পাকিস্তান অধিনায়ক ছিলেন এবং দ্বিতীয়জন ছিলেন দলের প্রধান কোচ।
অতীতে দু’বার পাকিস্তানের হেড কোচ ছিলেন বলে মিসবাহ’র অধীনে ওয়াকারের কাজ করার প্রস্তুতির খবর অনেকেই অবাক করে দিয়েছিল।
মিসবাহ-ওয়াকার দুজনের প্রথম পরীক্ষা আসন্ন ওয়ানডে এবং টি-টুয়েন্টি হোম সিরিজে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যা আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।