হৃদয় মণ্ডলের মামলাসহ সব সাম্প্রদায়িক ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আয়োজিত ওয়েবিনারের বক্তারা।
রোববার স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের ৫১তম বাষির্কী উপলক্ষে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এক আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারের আয়োজন করে।
প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক বলেন, নির্মূল কমিটি যেভাবে সাম্প্রদায়িকতার ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কাজ করছে, সে অবস্থানের সাথে আমরা সম্পূর্ণ একমত। আমরা ধর্মরক্ষা কিংবা কোনো গানের জন্য যুদ্ধ করিনি, আমরা যুদ্ধ করেছি অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তিলাভের জন্য।
‘‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছি। সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নিয়ে কাজ করছে। ড. লতা সমাদ্দার ও হৃদয় মণ্ডলের সাম্প্রতিক ঘটনাতেও সরকার যা করা দরকার করবে। মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার শিকড় খুব গভীরে, এতো সহজে তা উপড়ে ফেলা সম্ভব নয়। মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রাম করছে নির্মূল কমিটি। তাদের আন্দোলনের সঙ্গে দেশের প্রগতিশীল ব্যক্তি ও সংগঠনকে এগিয়ে আসতে হবে।’’
ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার বিজ্ঞানের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল এবং কপালে টিপ পরার কারণে পুলিশ সদস্য কর্তৃক লাঞ্ছনার শিকার লতা সমাদ্দার প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি বারবার আঘাত হেনে চলেছে। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির যে দূর্বৃত্তায়ন তা আমাদেরকে সামাজিক, রাজনৈতিক ও আইনগতভাবে প্রতিহত করতে হবে।’
নির্মূল কমিটির আইন সহায়ক কমিটির সভাপতি বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, পুলিশ কনস্টেবল ড. লতা সমাদ্দারকে লাঞ্ছিত করলেও তার কোনো সাজা হয়নি। প্রশাসনে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি ঘাপটি মেরে বসে আছে। সরকারের উচিত রাজাকার আলবদরদের বংশধরদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা।
হৃদয় মণ্ডলের প্রসঙ্গ তুলে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, প্রশাসন কীভাবে হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করল তা আমার বোধগম্য নয়। বোধ করি আমাকে পুনরায় আইন শিক্ষা নিতে হবে। হৃদয় মণ্ডলকে শুধু জামিন দিলেই চলবে না মামলা থেকে নাম প্রত্যাহার করে সসম্মানে তাকে নিজ দায়িত্বে পুনর্বহাল করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, হিজাব পরায় ছাত্রীকে প্রহার করার মিথ্যা অভিযোগে নওগাঁয় এক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়ানো হয়েছে। অথচ স্কুল ইউনিফর্ম পরে না আসার কারণে তিনি ছাত্রীদের লঘু শাস্তি দেন।