হুলুস্থূল করতে সবাই ভালবাসে। তবে সেই হুলুস্থূল যদি হয় ইতিবাচক, তাহলেতো কথাই নেই! আনন্দ মানেই হুলুস্থূল। বাংলা ভাষা আন্দোলনের মাসে সেই হুলুস্থূল কাণ্ড বাঁধিয়েছেন সাহিত্যিক প্রণব মজুমদার। পেশায় অর্থ বিষয়ক সিনিয়র সাংবাদিক। লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত ছোটবেলা থেকে।
‘হুলুস্থূল’ লেখক প্রণব মজুমদারের প্রথম গ্রন্থ। আশি দশকে দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত শিশুতোষ ১০টি গল্প নিয়ে হুলুস্থূল বইটি। প্রকাশ করেছে সৃজনশীল বইয়ের পুরানো প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান নন্দিতা প্রকাশ। প্রচ্ছদ শিশু সাহিত্যিক উত্তম সেনের। গল্পের ছবি অংকন করেছেন মদন কুমার দাশ।
প্রণব মজুমদার বলেন, ছোটবেলায় মাছ ধরা, বন বাদাড়ে ঘুরে বেড়ানো এবং খেলাধুলায় দস্যিপনা ছাড়াও আমাকে বেশ আকৃষ্ট করতো লেখালেখি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে লিখে ফেললাম একটি ছড়া! প্রকাশ হলো দেয়ালিকায়। মফস্বলের সাহিত্য সাময়িকীতে ছড়া ও কবিতা ছাপা হতে থাকলো। একদিন সাহস করে সে সময়ের বহুল প্রচারিত জাতীয় দৈনিক পত্রিকা দৈনিক সংবাদ এ পাঠালাম ছড়া। খেলাঘর পাতায় তা ছাপা হলো ছড়িয়ে দিলাম ছড়া বিভাগে। তারপর থেকে দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক সংবাদ, দৈনিক বাংলা, কিশোর বাংলা, শিশু, নবারুণ ও ধান শালিকের দেশ এ ছড়া, কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধ প্রকাশ অব্যাহত থাকলো দীর্ঘ সময়।
হুলুস্থূল গ্রন্থবদ্ধ গল্পগুলো আশি দশকের। দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক সংবাদ, দৈনিক বাংলা ও সাপ্তাহিক কিশোর বাংলা পত্রিকায় তা প্রকাশিত। দেশের গ্রামবাংলা, নগর, মহানগর এবং আমাদের গর্ব মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে লেখা সেই সময়কার গল্পগুলো আজও যেন সমসাময়িক কালের সামাজিক রূপ ও প্রকৃতির প্রতিচ্ছবি! প্রজন্মের ধারাবাহিকতায় শিশুতোষ গল্পগুলোতে চরিত্রের ভালমন্দের পরিণতি এবং জীবন আদর্শকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। ডিজিটাল যুগের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ভালোর পুরস্কার এবং মন্দের তিরস্কারকে এখানে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা রয়েছে। লেখক হিসেবে সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকেই এ প্রয়াস।
প্রণব মজুমদারের জন্ম ১৯৬৩ সালের ১৫ নভেম্বর। চাঁদপুরের পণ্ডিতপাড়ায়, মা নিলীমা মজুমদার (শিক্ষিতা ও রত্নগর্ভা), বাবা কালী কৃষ্ণ মজুমদার (চিকিৎসক, অবিভক্ত বাংলার ত্রিপুরা জেলার বিশিষ্ট নাট্যশিল্পী এবং ব্রিটিশ বিরোধী ভারত ছাড় আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক)। দু’জনেই প্রয়াত। শিক্ষা – স্নাতক (সম্মান), স্নাতকোত্তর ( হিসাববিজ্ঞান), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পেশা – সাংবাদিকতা ও খণ্ডকালীন শিক্ষকতা।
সাংবাদিকতায় বাংলা ও ইংরেজী ভাষায় দেশের ১২টি জাতীয় দৈনিক সংবাদপত্র এবং সংবাদ সংস্থায় অর্থনীতি ও ব্যবসা বাণিজ্য বিষয়ে রিপোর্টিং বিভাগে দায়িত্ব পালন করেছেন। কাজ করেছেন বিনোদন এবং অপরাধ বিষয়ক সাংবাদিকতায়ও। বর্তমান অবস্থান – সম্পাদক ও প্রকাশক, পাক্ষিক অর্থকাগজ এবং ঢাকা ব্যুরো প্রধান, জাতীয় দৈনিক শিরোনাম (কুমিল্লা)।
দেশ ও বিদেশের জাতীয় দৈনিক সংবাদপত্রে নিয়মিত বিশ্লেষণধর্মী কলাম লিখেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন ছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলে অর্থবাণিজ্য এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়ের অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশ নেন।