ভারতের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম (এসআইটি) সেদেশে সক্রিয় হরকাতুল জিহাদের একটি অংশকে বাংলাদেশ থেকে পরিচালনার দাবি করলেও বাংলাদেশের পুলিশের কাছে কথিত ওই হুজি পরিচালক আব্দুল জব্বারের অস্তিত্ব বিষয়েই কোনো তথ্য নেই।
এসআইটির হাতে আটক মোহাম্মদ নাসির ভারতীয় গোয়েন্দাদের জানিয়েছে, ভারতে হুজি নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করতে বাংলাদেশ থেকে কাজ করছে জব্বার।
ভারতে অবৈধভাবে বসবাসরত পাকিস্তানী নাগরিক নাসিরকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করে ভারতীয় পুলিশ।
বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের হাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একাধিকবার হত্যার চেষ্টা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা এবং রমনার বটমূলে বোমা হামলাসহ অনেক নাশকতামূলক কাজের সঙ্গে হুজির জড়িত থাকার প্রমাণ আছে।
কাপড় ব্যবসায়ীর ছদ্মপরিচয়ে হুজির হয়ে কাজ করা নাসিরের দেওয়া তথ্যে ভারতীয় পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো হুজির পরিচালক হিসেবে জব্বারের নাম জানার পর দেখেছে, নানা পরিচয়ে সে একাধিকবার ভারত সফর করেছে।
সর্বশেষ ২০১৩ সালে ভারত থেকে জব্বার বাংলাদেশে ফিরে অাসে বলেও তারা জানতে পেরেছেন।
তবে এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপকমিশনার মাশরুকুর রহমান খালেদ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, হুজির প্রধান সাইদুল বর্তমানে কারাগারে আছে। সেখান থেকে তার কিছু কার্যক্রম চেষ্টার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
‘কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা হলো হুজি অনেকগুলো গ্রুপে বিভক্ত। এর মধ্যে জব্বার কোনো গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছে কি না তা আমাদের জানা নেই,’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নাসিরের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই করতে জেএমবির জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার নূর ও ফাহিমকে খুব শিগগির দিল্লীতে জিজ্ঞাসাবাদ করবে ভারতীয় এসআইটি।
তারা দুজনই গ্রেপ্তারের পর এখন বিচারিক জিম্মায় রয়েছে বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।।
পাশাপাশি এসআইটি নাসির এবং জব্বারের ফোনকলের রেকর্ডও পর্যালোচনা করছে। হুজি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে এছাড়াও সম্প্রতি আরও ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতীয় পুলিশ।
বিভিন্ন সূত্র থেকে ভারতীয় পুলিশ জেনেছে, নাসির পাকিস্তানে একটি বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম দোকানের মালিক ছিলো। ১৯৯০ সালে এক দুর্ঘটনার পর দেড় লাখ পাকিস্তানি রুপিতে বাড়িটি বিক্রি করে সে জঙ্গি কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ে।
পরে করাচির একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকার সম্পাদক ও বাংলাদেশী নাগরিক আব্দুল জব্বারের সাথে তার পরিচয় হয়।
জব্বারের সহায়তায় নাসির একাধিকবার বাংলাদেশও ঘুরে গেছে। তবে তার দাবি, জব্বার যে অনেক বড় জঙ্গি নেতা সেটা তার জানা ছিলো না। সে শুধু তার নির্দেশনায় কিছু কাজ করেছে। পরে সে জানতে পারে, জব্বার বাংলাদেশে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’।
কিন্তু এই ‘ওয়ান্টেড’ জঙ্গির বিষয়ে বাংলাদেশের পুলিশের তেমন কিছু না জানা থাকার বিষয়ে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, হয়তো বাংলাদেশে অন্য কোনো নামে পরিচিত জব্বার।