৩০ ডিসেম্বর দেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একাদশ জাতীয় নির্বাচন। প্রার্থী চূড়ান্ত নির্বাচন, প্রতীক বরাদ্দ, ব্যালট পেপার ছাপানোসহ শেষসময়ের নানা কাজে ব্যস্ত নির্বাচন কমিশন।
এবারের নির্বাচনে এসবের মধ্যে যুক্ত হয়েছে প্রার্থিতা বাতিল হওয়া, নির্বাচন কমিশেন ও আদালতে আপিল করা, আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়া, আবার আদালতের আদেশে বাতিল হওয়া। এসবের কারণে শেষ মূহূর্তে ব্যালট পেপার ছাপা ও প্রতীক বরাদ্দে সমস্যায় পড়ছে ইসি। সব মিলিয়ে নির্বাচন কমিশন যে কর্মব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে, তা তাদের কথা থেকে বোঝা যাচ্ছে।
বুধবার রাজধানীর নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) এক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন।
নির্বাচন কমিশন সচিব আরও বলেন, ‘বিভিন্ন সময় মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা আসার কারণে আমাদের কিছু ক্ষেত্রে সমন্বয়-সংশোধন করতে হচ্ছে। কারণ আপনারা দেখেছেন হিরো আলম পর্যন্ত হাইকোর্ট দেখায়। হিরো আলম বলেন, নির্বাচন কমিশনকে আমরা হাইকোর্ট দেখিয়ে ছেড়েছি। বুঝেন অবস্থা। ও তো (হিরো আলম) স্বতন্ত্র প্রার্থী। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে যখন গেল তার নমিনেশন বাতিল হলো। আপিল করলে সেখানেও কমিশন বাতিল করেছে। পরে হাইকোর্টে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। তাকেও প্রতীক দেয়া হয়েছে। এ রকম ৫০ জনের ওপরে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে। হাইকোর্ট এখন বলছে একে এটা না ওই প্রতীক দেন। এসব নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন ও ব্যতিব্যস্ত।’
ইসি সচিবের বক্তব্যে তাদের প্রশাসনিক কাজের ধারাবাহিকতার জটিলতার কথা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠলেও একজন নাগরিক যে কিনা একজন প্রার্থী (হিরো আলম), তাকে হেয় প্রতিপন্ন করে তার সর্ম্পকে এমন মন্তব্যে সামাজিক মাধ্যমে অনেকে সমালোচনা করেছেন। বিষয়টি আমাদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। দেশের নাগরিকদের ভোটাধিকার নিয়ে কাজ করা নির্বাচন কমিশনের একজন সচিবের এধরনের বক্তব্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সংবিধানের ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী এবং রাষ্ট্র কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করিবে না।’
হিরো আলম ব্যক্তি জীবনে কী করেন, তার বর্তমান অবস্থান কী, এসব বিবেচনা,মূল্যায়ন করা ইসি সচিবের কাজ নয় বলেই আমাদের মনে হয়েছে। অনেকসময় এ ধরণের বক্তব্য অনেক বড় অসন্তোষের জন্ম দেয়। প্রজাতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিয়োজিত থেকে এধরণের বৈষম্যমূলক মন্তব্য কাম্য নয়। আমরা আশাকরি সংশ্লিষ্টরা ভবিষ্যতে বিষয়টি খেয়াল রেখে তাদের দায়িত্ব পালন করবেন।