ভারতজুড়ে চলা ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার নেতিবাচক ঢেউয়ে টালমাটাল ‘গণতান্ত্রিক’ ও ‘অসাম্প্রদায়িক’ দেশটির সংসদ। ‘৮’শ বছর পর হিন্দুর ক্ষমতায় আসা’ মন্তব্যের জেরেই সরকার ও কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের বাকবিতণ্ডয় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভারতের সংসদ।
‘হিন্দু শাসকে’র মন্তব্য ঘিরে উত্তেজনা চরমে পৌঁছালে দুপুর ২টা ৫ মিনিট পর্যন্ত সংসদ অধিবেশন বন্ধ রাখা হয়।
সোমবার ভারতের সংসদের (লোকসভা) শীতকালীন অধিবেশনের শুরুতেই বিজেপি সরকারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে বিরোধীরা। ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি সিপিএম’র সাংসদ মোহম্মদ সেলিম একটি পত্রিকা থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের মন্তব্য উদ্ধৃতি করে জানান, গত লোকসভা নির্বাচনে জয়ের পর রাজনাথ বলেছিলেন, “৮০০ বছর পরে দেশে প্রথম হিন্দু শাসক এসেছে”।
সেলিমের এই মন্তব্যে উত্তেজনা দেখা দেয় লোকসভায়। এমন কথা কখনো কোথাও বলেননি বলে তীব্র বিরোধিতা করেন রাজনাথ সিং। তাকে সমর্থন করেন বিজেপি সাংসদরা।
রাজনাথ বলেন, “সংসদীয় জীবনে কখনও এতটা ব্যথিত হইনি, যা আমাকে আজ হতে হল।” সেলিমকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “কখন এ কথা বলেছি আমি? সেলিম তা প্রমাণ করুন অথবা নিজের ইস্তফা দিন।” কিন্তু, নিজের অবস্থানে অটল সেলিম ক্ষমা চাইতে অস্বীকার করেন।
অধিবেশন বন্ধ থাকাকালীন নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসেন সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কোনও ভাবেই পিছিয়ে আসবেন না মহম্মদ সেলিম। সীতারাম ইয়েচুরি জানিয়েছেন, ক্ষমা চাওয়া তো দূরের কথা, নিজের মন্তব্য প্রত্যাহার করবেন না সেলিম।
গোটা বিতর্কে রাজনাথ তথাকথিত ‘হিন্দু শাসক’ মন্তব্য করার কথা অস্বীকার করলেও আক্রমণের ধার কমাননি সেলিম। তিনি বলেন, “যদি এ কথা রাজনাথ না-ই বলেন, তবে ওই পত্রিকার বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আইনি নোটিশ পাঠানো উচিত ছিল।”