কথা ছিলো হাসপাতাল থেকে ঋষি কাপুরকে মুম্বাইয়ের বাড়ি নেয়া হবে। সে মতো প্রস্তুতিও ছিলো। কিন্তু বর্তমান লকডাউন পরিস্থিতির কারণে অনুমতি দেয়নি মুম্বাই পুলিশ। ফলে হাসপাতাল থেকে সোজা শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হলো ভারতীয় এই কিংবদন্তি অভিনেতার মরদেহ।
বৃহস্পতিবার সাড়ে তিনটা নাগাটদ মুম্বাইয়ের স্যার এইচএন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন হাসপাতাল থেকে বের করা হয় ঋষি কাপুরের মরদেহ। এরপর মুম্বাই পুলিশের অনুরোধ মেনেই এই অভিনেতাকে মুম্বাইয়ের চন্দনওয়াড়ি শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়।
চারটার পর শুরু হয় শেষকৃত্যের আনুষ্ঠানিকতা। এসময় কাপুর পরিবারের ঘনিষ্ঠ সর্বোচ্চ কুড়ি জনের মতো উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় মিডিয়া। এরমধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঋষি কাপুরের ভাই রণধীর কাপুর, সাইফ আলি খান, কারিনা কাপুর, আলিয়া ভাট প্রমুখ।
সাধারণত বলিউডের কোনো তারকার মৃত্যুতে অন্তিম যাত্রায় থাকে তারকাদের মিছিল। ঢল নামে ভক্ত অনুরাগীদের। কিন্তু এখন সময় খারাপ। লকডাউনে পুরো ভারত। আর এ কারণে রীতিমত হাতে গোনা কয়েকজনের উপস্থিতিতে এই তুখোড় অভিনেতার শেষকৃত্য সম্পন্ন হলো।
এমনটা বোধহয় স্বপ্নেও ভাবেননি কেউ! এমন অনাড়ম্বর বিদায় এর আগে দেখেনি বলিউড! এরআগে বুধবার (২৯ এপ্রিল) ইরফান খানকে শেষ বিদায় দেয়ার সময়েও উপস্থিত ছিলেন দুই ছেলে ও পরিবারের পাঁচ সদস্যসহ অভিনেতার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের কয়েকজন!
২০১৮ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন ঋষি কাপুর। ওই বছরই সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্ক যান চিকিৎসার জন্য। গত বছরের সেপ্টেম্বরে দেশে ফেরেন তিনি। এরপর মোটামুটি ভালই ছিলেন, কিন্তু গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বুধবার মুম্বাইয়ের এইচএন রিলায়েন্স হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছিলো ঋষি কাপুরকে। বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ৯ টার দিকে হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
রাজ কাপুর ও কৃষ্ণা কাপুরের ছেলে ঋষি কাপুর। মাত্র তিন বছর বয়সে ‘শ্রী ৪২০’ ছবিতে তার অভিষেক হয় বড় পর্দায়। রাজ কাপুরের পরিচালনায় ‘মেরা নাম জোকার’ সিনেমার মাধ্যমেই অভিনেতা হিসেবে বলিউডে ঋষি কাপুরের ক্যারিয়ায় শুরু হয়। ‘ববি’ সিনেমায় অভিনয় করে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন তিনি। এই ছবিতে তার বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন ডিম্পল কাপাডিয়া।
১৯৭০ থেকে ১৯৯০-এর দশকে জনপ্রিয় অভিনেতা ছিলেন ঋষি কাপুর। ‘অমর আকবর অ্যান্থনি’, ‘কুলি’, ‘কর্জ’ এবং ‘চাঁদনি’-র মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন। শেষ তাকে দেখা গিয়েছিল ইমরান হাসমির সঙ্গে ‘দ্য বডি’ ছবিতে।